মালাউয়িতে ‘রক্তচোষা’ আতঙ্ক
আফ্রিকার দেশ মালাউয়িতে সম্প্রতি নয়জন কথিত রক্তচোষা মানুষকে হত্যা করেছে দেশটির দরিদ্র জনগোষ্ঠীর লোকজন। এ সংশ্লিষ্ট ঘটনায় অন্তত ২৫০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
লন্ডনভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দি ইনডিপেনডেন্টের খবরে বলা হয়, মালাউয়ির দারিদ্র্যপীড়িত দক্ষিণাঞ্চলের মুলানজে ও ফালমবে এলাকায় এ হামলার ঘটনাগুলো ঘটে। এলাকাগুলো ‘কালো জাদু’ ও ‘ডাকিনীবিদ্যা’র জন্য পরিচিত।
বিশ্বের ষষ্ঠ দরিদ্র দেশ মালাউয়িতে কয়েক মাস ধরেই ‘রক্তচোষা’ মানুষ সংক্রান্ত হামলার খবর ছড়িয়ে পড়েছে। এর মধ্যে বেলজিয়ামের এক জুড়িকে গাড়ি থেকে বের করে মারধরের অভিযোগ বেশ আতঙ্কের সৃষ্টি করে।
ইনডিপেনডেন্ট জানায়, হামলার শিকার হচ্ছে মূলত ধনীরাই। এ থেকে অনেকেই বলছেন, কথিত রক্তচোষারা আসলে মালাউয়ির ধনী সমাজ। তারা মানুষের রক্ত পান করে না। বরং দেশটির দরিদ্র জনগোষ্ঠীর ওপর ধনীদের আর্থিক শোষণের রূপক অর্থে এটি ব্যবহার করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে অরল্যান্ডো চ্যাম্পোন্ডা নামে হামলার শিকার এক ব্যক্তি বলেন, প্রায় দুই হাজার গ্রামবাসী তাঁর বাড়িতে ছুরি ও পাথর নিয়ে হামলা চালায়। সৌভাগ্যবশত তিনি সে সময় বাড়ির বাইরে ছিলেন। ফলে হামলাকারীদের হাত থেকে প্রাণে বেঁচে যান তিনি।
অরল্যান্ডো বলেন, ‘তারা এসে বলে আমি রক্তচোষাদের আশ্রয় দিয়েছি। আমাকে পেলে তারা মেরে ফেলত। আদতে রক্তচোষা বলে কিছুই নেই। একদল মানুষ ধনীদের সম্পদের লোভে এই হামলা করছে। কারো দামি গাড়ি থাকলে তাঁকেও রক্তচোষা আখ্যায়িত করা হচ্ছে।’
এদিকে সম্প্রতি রক্তচোষা আখ্যায়িত করে এক ব্যক্তিকে পাথর ছুঁড়ে হত্যা করা হয়। ওপর একজনকে পাথর ছুঁড়ে আহত করার পর আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়।
তবে রক্তচোষা বাস্তবে মালাউয়িতে আছে বলে দাবি করেছে আক্রান্ত এলাকার কয়েকজন গ্রামবাসী। বিভিন্ন সময়ে তাঁদের রক্ত পান করা হয়েছে বলে জানায় তারা। এর জের ধরেই রক্তচোষাদের নির্মূল করতে মাঠে নেমেছেন তাঁরা। তবে রক্তচোষা মানুষের বিষয়টি সম্পূর্ণ কল্পনাপ্রসূত বলে উড়িয়ে দিয়েছেন মালাউয়ির প্রেসিডেন্ট পিটার মুথারিকা।
এদিকে ‘রক্তচোষা’ আখ্যা দিয়ে হত্যাকাণ্ডের খবর মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ার পর জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা আক্রান্ত এলাকাগুলোতে তাদের কর্মকর্তাদের সরিয়ে নিয়েছে। এ ছাড়া সেখানে ভ্রমণ না করতে পর্যটকদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।