শ্রীলঙ্কায় বৌদ্ধ-মুসলিম দাঙ্গা, কারফিউ জারি
বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী এক ব্যক্তিকে হত্যা এবং মুসলিম ব্যবসায়ীর দোকান আগুনে পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট সহিংসতা রোধে শ্রীলঙ্কার পর্যটন নগরী ক্যান্ডিতে কারফিউ জারি করা হয়েছে।
স্থানীয় পুলিশের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা আলজাজিরা জানায়, গত সপ্তাহে ক্যান্ডিতে দাঙ্গা ও অগ্নিসংযোগের বেশ কিছু ঘটনা ঘটেছে। এতে শ্রীলঙ্কাজুড়ে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে।
পুলিশের মুখপাত্র রোআন গুনাসেকেরা বলেন, ‘এলাকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে কারফিউ জারি করা হয়েছে।’
এ ছাড়া সরকারি এক বিবৃতিতে বলা হয়, এ পরিস্থিতি যেন আন্তঃসাম্প্রদায়িক সংঘাত সৃষ্টি করতে না পারে, তা নিশ্চিত করার জন্য পুলিশ কর্মকর্তাদের উচ্চতর সতর্কতা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে।
এর আগে দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় একটি মসজিদে হামলা চালানো হয়। পাশাপাশি মুসলিম মালিকানাধীন বিভিন্ন দোকানে আগুন লাগানোর ঘটনা ঘটে। দাঙ্গার সময় একজন সিংহলি বৌদ্ধ নাগরিক মারা গেলে এই সহিংসতা বেড়ে যায়।
স্থানীয় কর্মকর্তারা জানান, অগ্নিসংযোগের ঘটনায় অন্তত ২৪ জন সন্দেহভাজনকে আটক করেছে পুলিশ। তবে জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা পুলিশের ভূমিকা নিয়ে তদন্ত শুরু করেছেন।
শ্রীলঙ্কার সেন্টার ফর হিউম্যান রাইটসের নির্বাহী পরিচালক রাজিথ কেরথি তেন্নাকুন দাঙ্গার সময় পুলিশের অদক্ষতার নিন্দা জানিয়ে বলেন, এই অদক্ষতার জন্যই সহিসংতার মাত্রা বেড়ে গেছে।
শ্রীলঙ্কার ন্যাশনাল ফ্রন্ট ফর গুড গভর্ন্যান্স পার্টির সেক্রেটারি নাজাহ মোহামেদ বার্তা সংস্থা আলজাজিরাকে জানান, সংঘাত শুধু ক্যান্ডিতে নয়, পুরো দেশে ছড়িয়ে গেছে।
তিনি বলেন, ‘আগের সরকারও মুসলমানদের সঙ্গে উত্তেজনা, ঘৃণা এবং সহিংস মনোভাব পোষণ করত। তখনো আমরা একই পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছিলাম।’
শ্রীলঙ্কার মোট জনসংখ্যার ৭৫ ভাগ বৌদ্ধ সিংহলি আর ১০ ভাগ মুসলমান। সেখানে ধর্মীয় ও জাতিগত সহিংসতা মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে বলে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো ধারণা করছে।
শ্রীলঙ্কায় ধর্মীয় সহিংসতা নতুন কিছু নয়। ২০১৪ সালের জুন মাসে আলোথগামার প্রাণঘাতী দাঙ্গার পর একটি মুসলিমবিরোধী অভিযান চালু করা হয়। ২০১৫ সাল প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনা ক্ষমতায় আসার পর মুসলিমবিরোধী অপরাধের তদন্তের প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, তবে এখনো কোনো উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি জানা যায়নি।