যুদ্ধের উত্তেজনার মধ্যে আলোচনায় বসছে দুই কোরিয়া
সীমান্তে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার পরিপ্রেক্ষিতে উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়ার শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা আলোচনায় বসছেন। দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টের কার্যালয় এই তথ্য জানিয়েছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টের কার্যালয় ব্লু হাউস থেকে জানানো হয়, আজ শনিবার গ্রিনিচ মান সময় সকাল ৯টায় সীমান্তবর্তী পানমুনজম গ্রামে দুই দেশের শীর্ষ নেতারা বৈঠকে বসার কথা।
উত্তর কোরিয়ার পক্ষ থেকে হুমকি দেওয়া হয়েছে, দক্ষিণ কোরিয়া সীমান্ত থেকে লাউড স্পিকারে সম্প্রচার বন্ধ না করা হলে দেশটির পক্ষ থেকে ‘শক্ত সামরিক পদক্ষেপ’ নেওয়া হবে।
গত বৃহস্পতিবার সীমান্তে দুই দেশের মধ্যে গোলাগুলিও হয়। উত্তর কোরিয়া ‘আধা যুদ্ধাবস্থা জারি’ করে।
দক্ষিণ কোরিয়া জানিয়েছে, তাদের পক্ষ থেকে অংশ নেবে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা কিম কোয়াং-জিন ও সমন্বয়মন্ত্রী হং ইয়ং-পিয়। আর হোয়াং পিয়ং-সো ও কিম ইয়ং-গন নামে উত্তর কোরিয়ার দুই জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ওই আলোচনায় অংশ নেবে।
এর আগে উত্তর কোরিয়ার পক্ষ থেকে দক্ষিণ কোরিয়া সীমান্তে রাখা লাউড স্পিকার সরিয়ে নেওয়ার সময় বেঁধে দেওয়া হয়। ওই লাউড স্পিকারের মাধ্যমে সংবাদ, আবহাওয়ার পূর্বাভাস ও গান চালানো হতো। উত্তর কোরিয়া ওই লাউড স্পিকারে হামলা করতে সীমান্তের কাছে সেনা মোতায়েন করে।
এমন যুদ্ধাবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে দক্ষিণ কোরিয়া সীমান্তের কাছ থেকে চার হাজার অধিবাসীকে সরিয়ে ফেলে। এর পর থেকেই যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার যুদ্ধবিমান সীমান্তের কাছেই উড়ছে।
দুই কোরিয়া কার্যতভাবে এখনো যুদ্ধাবস্থায় আছে। ১৯৫০-৫৩ সালে চলা যুদ্ধ অস্ত্রবিরতির মধ্যে দিয়ে শেষ হয়, কোনো শান্তি চুক্তি হয়নি।
মানসিক যুদ্ধ
দক্ষিণ কোরিয়ার দৈনিক কোরিয়া টাইমসের মতে, মানসিক যুদ্ধের কর্মসূচি হিসেবে দুই দেশই সীমান্তে লাউড স্পিকার লাগিয়ে নিজ নিজ দেশের মত প্রকাশ করা হয়। এর মাধ্যমে সীমান্তবর্তী এলাকার জনগণ ও সেনাদের প্রভাবিত করার চেষ্টা চলে। ২০০৪ সালে উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়া সীমান্তে লাউড স্পিকারে প্রচারণা বন্ধ এবং এগুলো সরিয়ে ফেলায় সম্মত হয়।
চলতি বছর সীমান্তের বেসামরিক অঞ্চল হিসেবে পরিচিত এলাকায় স্থল মাইন বিস্ফোরণে দক্ষিণ কোরিয়ার দুই সেনা আহত হন। এ জন্য দায়ী করা হয় উত্তর কোরিয়াকে। এই পরিপ্রেক্ষিতে ১০ আগস্ট থেকে পুনরায় সীমান্তে লাউড স্পিকারের সম্প্রচার শুরু করেছে দক্ষিণ কোরিয়া। এর একদিন পরই উত্তর কোরিয়াও সীমান্তে লাউড স্পিকার স্থাপন করে সম্প্রচার শুরু করে।
কিছু প্রতিবেদনে বলা হয়, উত্তর কোরিয়ার লাউড স্পিকারের মান খারাপ হওয়ায়, এতে কী বলা হচ্ছে তা দক্ষিণ কোরিয়ার সীমান্তে বোঝা বেশ কষ্টকর।
এর আগেও ২০১০ সালে লাউড স্পিকারে সম্প্রচারের হুমকি দিয়েছিল দক্ষিণ কোরিয়া। তবে ওই সময় লাউড স্পিকার স্থাপন করা হলেও সম্প্রচার চালু করা হয়নি। এর বদলে এফএম বেতার তরঙ্গে সম্প্রচার চালানো হয়।