এবার ২৩ দেশের ৫৯ কূটনীতিককে বহিষ্কার রাশিয়ার
সাবেক রুশ গোয়েন্দা কর্মকর্তা সের্গেই স্ক্রিপাল ও তাঁর মেয়েকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় পরিস্থিতি আরো ঘোলাটের দিকেই যাচ্ছে। রুশ-মার্কিন পাল্টাপাল্টি কূটনীতিক বহিষ্কারের পর এবার মস্কো আরো একধাপ এগিয়ে ২৩টি দেশের আরো ৫৯ কূটনীতিককে দেশ ছেড়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।
গতকাল শুক্রবার রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ৫৯ কূটনীতিকের প্রায় সবাই ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশের কূটনীতিক। মস্কোয় নিযুক্ত মিশনপ্রধানদের ডেকে কূটনীতিকদের দেশ ছেড়ে যাওয়ার তথ্য জানানো হয়েছে।
এর আগে সকাল থেকেই এসব দেশের জাতীয় পতাকাবাহী গাড়ি মস্কোর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রবেশ করতে দেখা যায়। যেসব দেশের কূটনীতিকদের বহিষ্কার করা হয়েছে সেগুলো হচ্ছে- অস্ট্রেলিয়া, আলবেনিয়া, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, পোল্যান্ড, নেদারল্যান্ড, ক্রোয়েশিয়া, ইউক্রেন, ডেনমার্ক, আয়ারল্যান্ড, স্পেন, এস্তোনিয়া, লাটভিয়া, মেসোডেনিয়া, মালদোভা, রোমানিয়া, নরওয়ে, কানাডা ও চেক রিপাবলিক।
রাশিয়ার সঙ্গে মার্কিন ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের এই দ্বন্দ্ব কি আবার স্নায়ুযুদ্ধের কথাই স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে- এমন প্রশ্নও তুলেছেন বৈশ্বিক রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের কেউ কেউ। মার্কিন ইটের জবাবে রুশ পাটকেলের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেজ।
গত ৪ মার্চ ব্রিটেনের সলসবেরির উইল্টশায়ারে একটি পার্কের বেঞ্চ থেকে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় পক্ষত্যাগকারী সাবেক রুশ গোয়েন্দা কর্মকর্তা সের্গেই স্ক্রিপাল ও তাঁর মেয়েকে উদ্ধার করা হয়। ধারণা করা হয়, তাঁদের বিষ প্রয়োগে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে।
এ ঘটনায় রাশিয়ার হাত রয়েছে বলে গত সপ্তাহে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতারা একমত হন। যদিও এতে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছে রাশিয়া।
এর জের ধরে গত সোমবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ৬০ রুশ কূটনীতিককে বহিষ্কার করেন। একসঙ্গে সিয়াটলের রুশ কনস্যুলেট বন্ধ করে দেওয়া হয়। এর জবাবে গত বৃহস্পতিবার মস্কো থেকে যুক্তরাষ্ট্রের ৬০ কূটনীতিককে বহিষ্কার করে রাশিয়া। একই সঙ্গে সেন্ট পিটার্সবুর্গের মার্কিন কনস্যুলেট বন্ধ করে দেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সেদিনই অবশ্য রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ জানিয়ে দিয়েছিলেন, রাশিয়ার কূটনীতিকদের বহিষ্কারের পাল্টা জবাব হিসেবে মস্কো এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের মতো ব্রিটেন ও তাদের মিত্র ২৮ রাষ্ট্রের সমান সংখ্যক কূটনীতিকদের রাশিয়া ফেডারেশন ছাড়তে হবে।
এদিকে, পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে কূটনীতিক বহিষ্কারের বিষয়ে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র হিদার নুয়ার্ট যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, এটা পরিষ্কার হলো রাশিয়া ফেডারেশন আলোচনার মাধ্যমে সংকট নিরসনে আগ্রহী নয়।
মুখপাত্র আরো বলেন, মার্কিন কূটনীতিকদের বহিষ্কারের কোনো যৌক্তিকতা নেই। আর ২৮টি মার্কিন মিত্র রাষ্ট্রের কূটনীতিকদের বহিষ্কারের ঘটনাও অন্যায্য।