ভোটাধিকার পেলেন সৌদি আরবের নারীরা
প্রথমবারের মতো ভোটাধিকার পেলেন সৌদি আরবের নারীরা। শুধু তাই নয় দেশটির শরিয়া কাউন্সিল সূত্রে গালফ নিউজ জানিয়েছে, এবার থেকে নির্বাচনে প্রার্থীও হতে পারবেন নারীরা।
দেশটিতে ভোটার হিসেবে গত ২২ আগস্ট থেকে নারীদের নিবন্ধনের কাজও শুরু হয়েছে। এই কাজ চলবে ২১ দিন ধরে। মক্কা ও মদিনায় নিবন্ধনের কাজ শুরু হয়েছে আরো ছয় দিন আগে। আর আগামী ৩০ আগস্ট থেকে মনোনয়ন সংগ্রহ করতে পারবেন নারী প্রার্থীরা।
সৌদি গেজেট জানায়, রোববার মক্কা ও মদিনায় যে দুজন নারী প্রথম ভোটার হয়েছেন তাঁরা হলেন- সানিফাজ আবু আল শামাত (মক্কা) এবং জামাল আল সাদি (মদিনা)। তাঁরা দুজন সৌদি আরবের ইতিহাসে প্রথম ভোটার। মক্কার বাসিন্দা আল শামাত জানান, তিনি স্থির করেছেন, দেশটির ভোটকেন্দ্রে তিনিই প্রথম প্রবেশ করবেন।
এদিকে আল-জাজিরা এক খবরে জানিয়েছে, এবারের পৌরসভা নির্বাচনে প্রায় ৭০ জন নারী প্রার্থী লড়বেন। নির্বাচনী প্রচারণায় পরিচালক হিসেবে থাকার সম্ভাবনা রয়েছে ৮০ জন নারীর।
রয়টার্সের খবরে ঘটনাটিকে সৌদি সমাজব্যবস্থায় একটি ঐতিহাসিক পরিবর্তন হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে।
গালফ নিউজ জানায়, এ বছরের ১২ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে সৌদি আরবের পৌরসভা নির্বাচন। এই নির্বাচনে প্রথমবারের মতো ভোট দেবেন এবং প্রার্থী হবেন সৌদি নারীরা।
গালফ নিউজ আরো জানায়, সৌদি আরবের প্রয়াত বাদশা আবদুল্লাহর নেওয়া সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দেশটিতে ভোটাধিকার পাচ্ছেন নারীরা। ২০১১ সালে প্রথম সৌদি আরবের রাজার তরফ থেকে মহিলাদের ভোটাধিকার দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছিল। সৌদি আরবের রাজনীতি ও সমাজে মেয়েদের চূড়ান্ত বৈষম্য নিয়ে অনলাইনে নিন্দার ঝড় ওঠায় সৌদি রাজপরিবারের পক্ষ থেকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেই সময় সৌদি আরবের রাজা আবদুল্লাহ বলেছিলেন, ‘শরিয়ত মতে যদি বাধা না থাকে, তাহলে কোনোভাবেই মহিলাদের আমরা সমাজে কোণঠাসা করে রাখতে পারি না।’
তবে শরিয়া কাউন্সিল সূত্রে মধ্যপ্রাচ্যের প্রভাবশালী এ পত্রিকা জানায়, সৌদি আরবে রাজতন্ত্র থাকায় রাজনৈতিক দল গঠনের কোনো সুযোগ পাবে না কেউ। তবে রাজতন্ত্রের অধীনে স্থানীয় প্রশাসন পরিচালনায় এখন থেকে অংশ নিতে পারবেন নারীরা। যে কারণে নারীদের ভোটাধিকার পাওয়াকে রাজনৈতিক স্বাধীনতা বা রাজনৈতিক অধিকার বলা হচ্ছে না। তবে রাষ্ট্রব্যবস্থায় নারীদের এই অন্তর্ভুক্তি সৌদির নারীদের অধিকার আদায়ের পথে হাঁটতে শেখাবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামেনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের কারেন মিডেলটন এই উদ্যোগকে স্বাগত জানালেও সৌদি আরবে লিঙ্গ বৈষম্য দূর করার পথে একে একটি ক্ষুদ্র অর্জন বলে মন্তব্য করেন। সৌদি সমাজে নারীদের বিভিন্ন সীমাবদ্ধতার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, নারীদের এখানে গাড়ি চালানোর অধিকার নেই। ভ্রমণে, আর্থিক কাজে অথবা উচ্চ শিক্ষায়, অথবা বিবাহের ক্ষেত্রে এখনো তাদের পুরুষ অভিভাবকের অনুমতি নিতে হয়।