পালমিরার মন্দির ধ্বংস যুদ্ধাপরাধ : ইউনেস্কো
সিরিয়ার পালমিরায় প্রাচীন মন্দির গুঁড়িয়ে দেওয়ায় আইএসের কঠোর সমালোচনা করেছে ইউনেস্কো। জাতিসংঘের এ সাংস্কৃতিক সংস্থাটি বলেছে, সিরিয়ার পালমিরায় প্রাচীন বাল শামিন মন্দির ধ্বংস একটা যুদ্ধাপরাধ। এ ছাড়া এই মন্দির ধ্বংসকে সিরিয়ার জনসাধারণ ও মানবতার জন্য একটা বিরাট ক্ষতি হিসেবেও আখ্যা দিয়েছে সংস্থাটি। সোমবার এক বিবৃতিতে এ বিষয়ে ইউনেস্কোর এ অবস্থানের কথা জানানো হয়।
ইউনেস্কোর মহাপরিচালক ইরিনা বোকোভা বলেন, ‘এ ধরনের হামলার প্রকৃত উদ্দেশ্যে হলো সিরিয়ার সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যতার মূর্ত প্রতীকগুলোর পরিকল্পিত ধ্বংসসাধন। এর ফলে সিরিয়ার জনগণ তাদের ইতিহাস ও ঐতিহ্য সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান থেকে বঞ্চিত হবে।’ তিনি বলেন, এর সঙ্গে জড়িতদের অবশ্যই জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে।
সিরিয়ার পুরাকীর্তিবিষয়ক প্রধান মামুন আবদুল করিমের বরাতে বাসস জানায়, রোববার মন্দিরটি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এতে স্থাপনাটির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। কিন্তু যুক্তরাজ্যভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস বলছে, এক মাস আগেই এটি ধ্বংস করা হয়েছে।
আইএস গত মে মাসে পালমিরার নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর থেকে মন্দিরটি ধ্বংস করা নিয়ে আশঙ্কা ছড়িয়ে পড়েছিল। অপূর্ব কারুকার্যমণ্ডিত এই স্থাপত্য ১৭ খ্রিস্টাব্দে তৈরি করা হয়েছিল। ১৩০ খ্রিস্টাব্দে রোমান সম্রাট হাদ্রিয়ানের আমলে মন্দিরটির সম্প্রসারণ করা হয়।
প্রাচীন সেই পালমিরা এতদিন তাদমুর হিসেবে পরিচিত ছিল। পালমিরা মানে তালগাছের শহর। রাজধানী দামেস্ক থেকে ২১০ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে ও পূর্বাঞ্চলীয় দেইর আল জাউর শহরের মধ্যবর্তী সড়কের কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ স্থানে এটি অবস্থিত। কাছেই মরুভূমির প্রাচীন নগরীর ধ্বংসাবশেষ রয়েছে, যাকে ইউনেস্কো ও অন্যরা প্রাচীন বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক অঞ্চল হিসেবে বিবেচনা করে। প্রায় দুই হাজার বছরের পুরোনো রোমান যুগের শিল্প-স্থাপত্যে তৈরি বাল শামিন মন্দিরটি জাতিসংঘ স্বীকৃত বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ।
এর আগে ইরাকেও বেশ কয়েকটি প্রাচীন নিদর্শন ধ্বংস করেছে আইএস জঙ্গিরা। ইউনেস্কো এ সময়ও বলেছিল, এটা যুদ্ধাপরাধ ও সাংস্কৃতিক নিদর্শন মুছে ফেলার জঘন্য কর্মকাণ্ড।