লিবিয়ায় নৌকাডুবিতে পাঁচ বাংলাদেশিসহ নিহত ২০০
লিবিয়ার উপকূলে কয়েকশ অভিবাসনপ্রত্যাশীকে নিয়ে ডুবে যাওয়া দুটি নৌকায় কমপক্ষে ২০০ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে পাঁচজন বাংলাদেশি বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। তিউনিসিয়ায় অবস্থিত বাংলাদেশের লিবিয়া দূতাবাসের কর্মকর্তা চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স মোজাম্মেল হক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বার্তা সংস্থা বিবিসিকে মোজাম্মেল হক জানান, পাঁচশর বেশি মানুষকে দুটি নৌকায় করে ইতালি নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। পথের মাঝে হঠাৎ নৌকা দুটি ডুবে যায়। ওই দুই নৌকায় মোট ৩১ জন বাংলাদেশি ছিল। এর মধ্যে পাঁচজন নিহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে দুজন শিশু রয়েছে। লাইফ জ্যাকেট পরে থাকায় বেশির ভাগ বাংলাদেশিকে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।
মোজাম্মেল হক আরো জানান, চারটি পরিবারসহ মোট ৩১ জন বাংলাদেশি লিবিয়ার জুয়ারা এলাকা দিয়ে নৌকা করে ইতালি যাওয়ার চেষ্টা করছিল। তবে নৌকার তলদেশে ফুটো থাকায়, প্রায় একঘণ্টা যাওয়ার পর নৌকাটি উল্টে যায়। ছয় বছর আর ছয় মাস বয়সী দুটি শিশু সেখানেই নিহত হয়। আরো দুটি পরিবারের চারজন এখনো নিখোঁজ রয়েছে। তবে অন্যরা লাইফ জ্যাকেট পরে থাকায় সারা রাত ভেসে ছিল। ভোরে তাদের উদ্ধার করা হয়। তাদের লিবিয়ায় ফিরিয়ে আনা হয়েছে। জীবিতদের উদ্ধার করে তীরে নেওয়ার কাজ অব্যাহত রয়েছে।
লিবিয়া দূতাবাসের কর্মকর্তা আরো জানান, ঘটনায় বেঁচে যাওয়া একটি পরিবারের সঙ্গে কথা হয়েছে। এদের দুটি পরিবার সিরতে থেকে এসেছে, অন্যরা ত্রিপোলিতেই বসবাস করত। দীর্ঘদিন ধরে এই পরিবারগুলো লিবিয়াতে রয়েছে। সন্তানদের সবার জন্ম হয়েছে লিবিয়ায়। তবে দেশটির পরিস্থিতি খারাপ হয়ে যাওয়ায় তারা সমুদ্রপথে ইতালি যাওয়ার চেষ্টা করছিল।
তিনি বলেন, এর আগেও এই পরিবারগুলো ইতালি যাওয়ার চেষ্টা করেছে। তাদের বারবার সতর্ক করার পরেও তারা ঝুঁকি নিয়ে সমুদ্রপথে সেখানে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এখন পরিবারগুলোর ইচ্ছা অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআরের মুখপাত্র উইলিয়াম স্পিনড্লার বিবিসিকে বলেন, ‘নৌকাদুটিতে প্রায় ৫০০ মানুষ ছিল। যারা ইউরোপে আসার চেষ্টায় সমুদ্র পাড়ি দিয়েছিল। লিবিয়ার উপকূলরক্ষীরা উদ্ধারকৃতদের তীরে আনার অভিযান অব্যাহত রেখেছে।’
স্পিনড্লার জানান, এই নৌকা দুটির শরণার্থীরা সিরিয়া, বাংলাদেশ ও সাহারা মরুভূমির দক্ষিণের দেশগুলোর নাগরিক।
প্রসঙ্গত, চলতি বছর নৌকায় করে লিবিয়া থেকে ইতালিতে সাগর পাড়ি দিতে গিয়ে এ পর্যন্ত দুই হাজারের বেশি শরণার্থীর মৃত্যু ঘটেছে।