মালয়েশিয়ায় জাতীয় ঐক্যের ডাক নাজিবের
মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক পদত্যাগ করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে জাতীয় ঐক্যের আহ্বান জানিয়েছেন। আজ সোমবার মালয়েশিয়ার জাতীয় দিবস উপলক্ষে জনগণের উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি এ আহ্বান জানান। জনগণের তহবিল থেকে লাখ লাখ ডলার আত্মসাতের অভিযোগে তাঁর পদত্যাগের দাবিতে রাজধানী কুয়ালালামপুরসহ বিভিন্ন শহরের সড়কগুলোতে গত দুদিন লাখো মানুষ বিক্ষোভ করেছে।
জনগণের ৭০ কোটি মার্কিন ডলার (পাঁচ হাজার ৪১১ কোটি টাকা) আত্মসাতের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে নাজিব বলেন, ‘বিক্ষোভ একটি গণতান্ত্রিক দেশে মতামত প্রকাশের সঠিক পন্থা নয়। এটি পরিষ্কার যে, মালয়েশিয়ার বাকি সবাই সরকারকে সমর্থন দিচ্ছে।’
রাষ্ট্র পরিচালিত সংবাদ সংস্থা বার্নামায় নাজিবের ভাষণ তুলে ধরা হয়েছে। সেখানে তিনি বলেন, ‘আমরা যা সৃষ্টি করেছি, তা ধ্বংস করে দেবে এমন কাউকে আমরা কখনো মেনে নেবো না—তিনি দেশের অভ্যন্তরের কেউ হন বা বাইরের কেউ হন। আমাদের সবাইকে মনে রাখতে হবে, আমরা যদি ঐক্যবদ্ধ না হই, তাহলে আমরা আমাদের সংহতি হারাব, সব সমস্যা সমাধান করতে পারব না। কষ্টে অর্জিত সবকিছু ধ্বংস হয়ে যাবে।’
বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ওয়ান মালয়েশিয়া ডেভেলপমেন্ট বারহাড (ওয়ানএমডিবি) তহবিল থেকে নাজিবের অর্থ আত্মসাতের খবর প্রথম প্রকাশিত হয় ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে। মালয়েশিয়াকে একটি উচ্চ আয়ের দেশে রূপান্তরিত করার লক্ষ্যে ২০০৯ সালে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণের সময় নাজিব এই তহবিল গঠন করেন। এই কেলেঙ্কারির সমালোচনা করায় নাজিব উপপ্রধানমন্ত্রীসহ নেতৃত্বস্থানীয় বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করেছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, গত দুদিনের বিক্ষোভে ২৫ হাজার মানুষ যোগ দিয়েছে। তবে গণতন্ত্রপন্থী সংগঠন বারসিহ (পরিষ্কার) দাবি করেছে, তাদের এই বিক্ষোভে তিন লাখ মানুষ যোগ দিয়েছে।
গত শনিবার নাজিববিরোধী বিক্ষোভে ভাষণ দেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ। এ সময় তিনি নাজিবের পদত্যাগ দাবি করেন। নাজিবের সাবেক এই মিত্র বলেন, ‘আর বেশিদিন তাঁর (নাজিব রাজাক) অবস্থানে থাকাকে সমর্থন দেওয়া যায় না। এখানে কোনো আইনের শাসন নেই। পুরোনো ব্যবস্থায় ফিরে যাওয়ার জন্য জনগণের জন্য একটিই পথ খোলা রয়েছে, তা হলো প্রধানমন্ত্রীকে সরিয়ে দেওয়া।’ মাহাথির ১৯৮১ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত মালয়েশিয়ার নেতৃত্ব দেন।