গাজায় ইসরায়েলি সেনাদের তাণ্ডব, নিহত অর্ধশতাধিক
গাজায় বিক্ষোভকারী ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলা করেছে ইসরায়েলি সেনারা। বিক্ষোভকারী ফিলিস্তিনিরা ছিল নিরস্ত্র। ওই ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়েছে চার শতাধিক ফিলিস্তিনি। আহত হয়েছে দুই হাজারেরও বেশি মানুষ।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে সর্বশেষ তথ্য (বাংলাদেশ সময় সোমবার রাত ১০টা) অনুযায়ী ৫২ জন নিহত হয়েছে।
আজ সোমবার এ ঘটনা ঘটে। জেরুজালেমে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস আনুষ্ঠানিকভাবে স্থানান্তরের দিনেই গাজায় হামলার ঘটনা ঘটল। প্রতিবাদকারী নিরস্ত্র বিক্ষোভকারীদের ওপর ড্রোন হামলা করে ইসরায়েলের সেনারা। কাঁটাতারের ওপাড় থেকে ছুঁড়ে গুলি।
সংবাদ মাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, আজই ইসরায়েলের স্থানীয় সময় বিকাল চারটার দিকে জেরুজালেমে মার্কিন দূতাবাস উদ্বোধন করা হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের মেয়ে ইভানকা ট্রাম্প ও ইভানকার স্বামী জেরার্ড কুশনার।
ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা বলছেন, তেল আবিব থেকে মার্কিন দূতাবাস জেরুজালেমে সরিয়ে নেওয়ার ঠিক কয়েক ঘণ্টা আগেই ফিলিস্তিনি বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালায় ইসরায়েলি সেনারা।
ফিলিস্তিনিদের বিক্ষোভ আর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমালোচনা উপেক্ষা করেই জেরুজালেমে দূতাবাস স্থানান্তর করল যুক্তরাষ্ট্র।
ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা ৪৩। বিবিসি জানিয়েছে, আহতের সংখ্যা এক হাজার ৮০০ এর মত।
আজ সকালেই অবরুদ্ধ গাজায় জড়ো হয় সাড়ে তিন হাজার বিক্ষোভকারী। প্রতিবাদ শুরু হয় রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে আর ঢিল ছুঁড়ে। এরপর প্রতিবাদকারী হাজারো নিরস্ত্র বিক্ষোভকারীর উপর গাজার আকাশ থেকে ইসরাইলি ড্রোন হামলা হয়। কাটাতাঁরের বেড়ার ওপাড় থেকে ইসরাইলি সেনারা ছুঁড়তে থাকে গুলি। বিক্ষোভকারীদের দমন করতে ইসরায়েলের সেনাদের ছোঁড়া টিয়ারশেল আকাশ থেকে পড়তে থাকে বৃষ্টির মতো। আর এ ঘটনায় হাজারো বিক্ষোভরত ফিলিস্তিনি গুলি আর টিয়ারশেলের আঘাতে হতাহতের শিকার হয়। যাদের মধ্যে শতাধিক নারী ও শিশুও রয়েছে। স্থানীয় সাংবাদিকরা বলছেন, গত কয়েক সপ্তাহের তুলনায় এদিনের বিক্ষোভে অনেক বেশি ফিলিস্তিনি অংশ নিয়েছে। এছাড়া পশ্চিম তীর, বেথেলহেমেও বিক্ষোভ করেছে হাজারো ফিলিস্তিনি।
ইসরায়েলি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বর্ষপূর্তির দিন, যা ফিলিস্তিনে পালন করা হয় নাকাবা বা বিপর্যয়ের দিন হিসেবে, এমন দিনে জেরুজালেমে মার্কিন দূতাবাসের কার্যক্রম শুরু করা নিয়ে ইসরায়েল উৎসবের ঘোষণা দেয়। এছাড়া জেরুজালেমে জোরদার করা হয়েছে নিরাপত্তা। আর তেলআবিব থেকে জেরুজালেমে সীমিত আকারে মার্কিন দূতাবাসের কার্যক্রম শুরুর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে যোগ দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মেয়ে ইভানকা ট্রাম্প ও জামাত জ্যারেড কুশনার।
পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে আরব লীগ জরুরি সভার আহবান করেছে। তবে ইসরায়েলের দাবি, বিক্ষোভকারীরা তাদের সীমান্ত লঙ্ঘন করেছে।