স্পাইডারম্যানের মতো শিশুকে বাঁচিয়ে পেলেন নাগরিকত্ব
ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসের রাস্তার পাশের একটি বাড়ির বারান্দা থেকে পড়ে যাচ্ছিল একটি শিশু। বহু কষ্টে বারান্দার রেলিং আঁকড়ে ঝুলে ছিল সে। নিচে শত মানুষের ভয়ার্ত চিৎকার। সবাই সন্দিহান, বাঁচানো যাবে শিশুটিকে?
ঠিক এমন সময়, ওই ভবন বেয়ে অবিশ্বাস্য গতিতে উঠতে শুরু করলেন এক কৃষ্ণাঙ্গ যুবক। সবাইকে অবাক করে দিয়ে অনেকটা স্পাইডারম্যানের মতো শিশুটির কাছে পৌঁছে গেলেন ওই যুবক। এরপর নিরাপদে উদ্ধার করলেন তাকে।
নিচে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষ তুমুল করতালি দিয়ে উল্লাস জানালেন।
এই পুরো ঘটনা ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করেছেন কেউ। আর সঙ্গে সঙ্গেই সেটি ভাইরাল হয়ে গেছে। গোটা বিশ্বের কাছে ছড়িয়েছে মুহূর্তের মধ্যে।
কৃষ্ণাঙ্গ ওই যুবকের নাম মামুদু গাসসামা। তিনি আফ্রিকার দেশ মালির নাগরকি।
তবে শিশুটিকে বাঁচিয়ে চরম সাহসিকতার পরিচয় দিয়ে মামুদু পেয়ে গেছেন ফ্রান্সের নাগরিকত্ব। আর দেশটির প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাকরন স্বয়ং মামুদুকে এই সুযোগ দিয়েছেন।
চার বছরের ওই শিশুকে বাঁচানোয় মামুদুর অবদানের ভিডিও দেখে তাঁর সঙ্গে দেখা করে ইমানুয়েল ম্যাকরন। প্রশংসা করেন মামুদুর সাহসিকতার। পরিয়ে দেন সাহসিকতার মেডেল। সেই সঙ্গে এটাও জানান যে, মামুদুকে দেওয়া হবে ফ্রান্সের নাগরিকত্ব।
কী ঘটেছিল সেইদিন?
জানতে চাইলে ফ্রান্সের বিএফএম টিভিকে মামুদু গাসসামা জানান, শহরের উত্তর দিকের পথ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন তিনি। হঠাৎ একটি ভবনের সামনে বহু মানুষকে জড়ো হয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখতে পান। খেয়াল করে দেখেন, ওই ভবনের একটি বারান্দা থেকে ঝুলছে একটি শিশু। তখনো ভাবেননি শিশুটিকে বাঁচাতে পারবেন। এরপর উঠে যান ভবনটির দেয়ালে। উদ্ধার করেন শিশুটিকে।
মামুদু বলেন, ‘যখন আমি শিশুটিকে আমার কোলে নিলাম তখন তার কাছে জানতে চাই, কেন সে এমন করেছে। কিন্তু সে কোনো জবাব দেয়নি।’
স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, ওই সময় শিশুটির বাবা-মা বাড়িতে ছিলেন না। শিশুটির মা ছিলেন, দেশের বাইরে। তবে কেন শিশুটিকে একা বাড়িতে রেখে বাইরে গেছিলেন তার জন্য পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের মুখে পড়েছেন শিশুটির বাবা।
২২ বছর বয়সী মামুদুকে ১৮ সালের স্পাইডারম্যান বলে আখ্যা দিয়েছেন প্যারিসের মেয়র অ্যানে হিদালগো। মামুদুকে সব নাগরিকের জন্য অনুকরণীয় চরিত্র হিসেবেও বর্ণনা করেন তিনি।