এবার ডেনমার্কে নিষিদ্ধ হলো বোরকা ও হিজাব
ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশের মতো ডেনমার্কেও এবার বোরকা ও হিজাবকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলো। গতকাল বৃহস্পতিবার দেশটিতে এই আইন জারি করা হয়।
বিবিসির প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, জনসমক্ষে বোরকা বা পর্দা না করার এই আইন প্রণয়নের সমর্থনে দেশটির সংসদে ৭৫ ভাগ ভোট পড়ে। এই আইনে বোরকা বা হিজাবের নাম আলাদা করে উল্লেখ করা হয়নি।
সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ানের দেওয়া তথ্যমতে, আইনটি ‘বোরকা ব্যান’ বা বোরকা নিষিদ্ধ নামেই পরিচিত। বিশেষ করে মুসলিম নারীদের উদ্দেশ করেই আইনটি করা হয়েছে বলেও জানায় সংবাদমাধ্যমটি।
আইনটি আগামী ১ আগস্ট থেকে প্রয়োগ করা হবে। আইন ভঙ্গের কারণে জরিমানা করা হতে পারে ডেনমার্কের মুদ্রায় এক হাজার ক্রোনার। আর পুনরায় আইন ভঙ্গের কারণে জরিমানা হবে ১০ হাজার ক্রোনার।
রয়টার্সের দেওয়া তথ্য থেকে জানা যায়, আইনটির প্রয়োগ শুরু হলে, জনসমক্ষে বোরকা পরিহিত কোনো নারীকে বোরকা খুলে ফেলতে বা ওই স্থান থেকে চলে যেতে আদেশ করতে পারবেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
ডেনমার্কের কর্তৃপক্ষ জানায়, দেশটির মূল্যবোধের সঙ্গে মুখ ঢেকে রাখা নাকি বেমানান। দেশটির আইনমন্ত্রী সোরেন পেইপ পৌলসেন বলেন, ‘মূল্যবোধ অনুযায়ী, আমি একটা আলোচনা হতে দেখি যে তৃণমূল ও সাংস্কৃতিক পর্যায়ে আমাদের কী ধরনের সমাজ হওয়া উচিত। আমরা আমাদের মুখ এবং চোখ ঢাকি না। ডেনমার্কের মূল্যবোধ হলো, আমাদের অবশ্যই একজন আরেকজনের মুখ ও মুখভঙ্গি দেখতে হবে।’
তবে এই আইনের বিরোধীরা বলছেন, আইনটি নারীর পছন্দের পোশাক পরিধানের স্বাধীনতা ও নিজেকে উপস্থাপনের অধিকার লঙ্ঘন করবে।
ইউরোপে নিয়োজিত অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের পরিচালক গাউরি ফন গুলিক বলেন, ‘প্রত্যেক নারীরই তাদের পছন্দের পোশাক পরিধানের স্বাধীনতা থাকা উচিত। তাদের ধর্মীয় পরিচয় ও বিশ্বাসকে তুলে ধরে এমন পোশাকও তারা পরতে পারেন। যে সকল মুসলিম নারীরা হিজাব ও বোরকা পরতে পছন্দ করেন, তাদের ওপর এই আইনের নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।’ তিনি বলেন, ‘মানুষের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে কখনো কখনো এই বাধানিষেধ থাকতে পারে। কিন্তু এই সার্বজনীন নিষেধাজ্ঞা প্রয়োজনও না, উপযোগীও না। এটি ব্যক্তির ব্যক্তি স্বাধীনতা ও ধর্মীয় স্বাধীনতা প্রকাশের ক্ষেত্রে একটা বাধা।’
এর আগে ইউরোপের ফ্রান্স, বেলজিয়াম, নেদারল্যান্ডস, বুলগেরিয়া, জার্মানিতে বোরকা নিষিদ্ধ করা হয়। বেশ কয়েক বছর ধরে ডেনমার্ক অভিবাসী সমস্যায় ভুগছে। বিশেষ করে সম্প্রতি মধ্যপ্রাচ্য থেকে যাওয়া শরণার্থীদের নিয়ে সমস্যায় রয়েছে দেশটি।