সিরিয়ার এতিমদের ওপর সৌদি আরবের নিষেধাজ্ঞা
সমুদ্রতীরে পড়ে থাকা সিরীয় শিশু আয়লান কুর্দির মৃতদেহ দেখে থমকে গেছে বিশ্ব মানবতা। প্রতিবাদ আর সাহায্যের কথা চলছে সবখানে। তবে এসবে মোটেও ‘প্রভাবিত’ নয় সৌদি সরকার।
আরব নিউজ জানিয়েছে, সৌদি আরবের কোনো পরিবার সিরীয় কিংবা অন্য কোনো দেশের এতিম শিশুদের পোষ্য করতে পারবেন না। সৌদি আরবের সমাজবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে কড়া নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের সোশ্যাল সুপারভিশন বিভাগের পরিচালক লতিফাহ্ আল-তামিমি বলেন, ‘সিরিয়া বা ইরাকের মতো আরব দেশগুলোর যুদ্ধ আক্রান্ত শিশু যারা মা-বাবাকে হারিয়েছে; এদের কোনো ধরনের দেখভালের দায়িত্ব মন্ত্রণালয় গ্রহণ করবে না। এ ধরনের বিষয়াশয় নিয়ে কাজ করার জন্য আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো রয়েছে।’
সুতরাং, কোনো সৌদি পরিবার চাইলেও সিরীয় বা অন্য কোনো দেশের যুদ্ধে এতিম শিশুদের পোষ্য হিসেবে গ্রহণ করতে পারবে না। এ বিষয়টি কেবলই সৌদি আরবের নাগরিকদের ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধ। অবশ্য লতিফাহ্ এও জানিয়ে রাখেন যে, বিদেশি কোনো নাগরিকের অর্থাৎ বিদেশি কোনো নারীর যদি সৌদি আরবের কোনো পুরুষের সঙ্গে বিয়ে হয়, তাদের সন্তানের জন্য পূর্ণাঙ্গ নাগরিক অধিকার দেশটির সরকার প্রদান করে থাকে।
লতিফাহ্ বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে সৌদি আরবের বিভিন্ন পরিবারের ৫৬০ জন এতিমকে পালন করা হচ্ছে। এরা অবশ্য সবাই সৌদি আরবেরই নাগরিক। এদের জন্ম পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট এবং অন্যান্য ব্যক্তিগত তথ্যাদিরও ব্যবস্থা রয়েছে। সরকার এই পরিবারগুলোকে মাসে তিন হাজার সৌদি রিয়াল দিয়ে থাকে। সেই সঙ্গে এই শিশুদের বিনামূল্যে বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা এবং ব্যাংক অ্যাকাউন্টের ব্যবস্থাও করে থাকে বলে জানান তামিমি।
সৌদি এতিম শিশুদের অবশ্যই তাদের জন্মগত পরিবারের নাম অক্ষুণ্ণ রাখা হয়, সেই সঙ্গে তারা বড় হলে তাদের আসল পরিচয়ও বাধ্যতামূলকভাবে জানানোর নিয়ম রয়েছে। এই পদ্ধতির কোনো ধরনের বরখেলাপ মন্ত্রণালয় বরদাশত করবে না বলে জানান তামিমি।
সৌদি আরবের উম আল-কুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক সায়েন্স বিভাগের সাবেক অধ্যাপক আবদুল্লাহ মাক্কি বলেন, ‘ইসলাম ধর্ম সব সময়ই এতিমদের ভরণপোষণের ব্যাপারে উৎসাহ দিয়ে থাকে, যাতে এই এতিম শিশুরা একটি পারিবারিক আবহে বড় হয়ে উঠতে পারে।’ অবশ্য, কোনো শিশুর আসল পরিচয়ই পরিবর্তন করা উচিত নয় বলে মনে করেন তিনি।