চিড়িয়াখানায় গাধাকে রং দিয়ে করা হলো জেব্রা
ঈশপের গল্পে শিকারের লোভে ভেড়ার চামড়া গায়ে ছদ্মবেশ নেওয়া এক নেকড়ের কথা আমরা অনেক শুনেছি। নেকড়ে বেচারাকে শেষমেশ ভয়ানক মাশুলও গুনতে হয়েছিল সেই ছদ্মবেশ ধারণ করায়। অনেকটা সে রকমই একটা ঘটনা এবার সত্যি সত্যিই ঘটেছে এক চিড়িয়াখানায়।
মিসরের কায়রোতে এক চিড়িয়াখানায় গাধার গায়ে রং করে জেব্রা বলে চালিয়ে দেওয়া হচ্ছে। দর্শনার্থীদের এভাবে বোকা বানানোর চেষ্টা করায় চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু ব্যাপারটি অস্বীকার করেছে কর্তৃপক্ষ।
আজ শুক্রবার সিএনএনে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, মাহমুদ সারহান নামের এক মিসরীয় তরুণ সম্প্রতি কায়রোর ইন্টারন্যাশনাল গার্ডেনে সংযুক্ত নতুন একটি চিড়িয়াখানা পরিদর্শনের সময় কিম্ভূত এক প্রাণীর মুখোমুখি হন। ওই প্রাণীটিই নাকি জেব্রা!
সারহান বলেন, বেশ কয়েকটি ব্যাপার থেকে তাঁর সন্দেহের উদ্রেক হয়। জেব্রা বলে প্রদর্শিত প্রাণীগুলোর মুখে করা কালো রং গলে পড়ছে, আর দেখা যাচ্ছে যে স্বাভাবিক জেব্রার কানের চেয়ে ওই প্রাণীগুলোর কান অনেক বড়।
এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে সারহান প্রাণীগুলোর ছবি পোস্ট করার পরপরই তা ভাইরাল হয়ে যায়।
ছবিতে দেখা যায়, সারহান ওই প্রাণীগুলোর পাশে বিমূঢ় হয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। ফেসবুকে আরবিতে তিনি লেখেন, ‘এই দেশে নির্বুদ্ধিতা এতদূর পৌঁছে গেছে যে দেশি গাধার গায়ে রং করে জেব্রা বলে চালিয়ে দেওয়া হচ্ছে’।
এমন আপত্তিকর অভিযোগ ওঠার পর চিড়িয়াখানার পরিচালকের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযোগ পুরোপুরি অস্বীকার করে তিনি বলেন, ‘ওই জেব্রাগুলো সত্যিকারেরই জেব্রা, মোটেই রং করা নয়।’
পরিচালক আরো বলেন, ‘আমাদের চিড়িয়াখানার সব প্রাণীকেই খুব যত্নের সঙ্গে দেখভাল করা হয়, নিয়মিত পরিদর্শনও করা হয়।’
পশুসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কর্মরত ‘পেটা’ নামে একটি সংগঠনের ভাইস প্রেসিডেন্ট ডেলসিয়ানা উইন্ডার্স সারহানের পোস্ট করা ছবিগুলো পর্যালোচনা করে সিএনএনকে বলেন, ‘কোনো দায়িত্বশীল প্রতিষ্ঠান গাধার মতো নিরীহ একটি প্রাণীর গায়ে রাসায়নিক রং লাগাতে পারে না, এটি থেকে ভয়াবহ যন্ত্রণাদায়ক অ্যালার্জি হতে পারে।’ কায়রো কর্তৃপক্ষ বিষয়টি পুরোপুরি আমলে নিয়ে ভালোভাবে তদন্ত পরিচালনা করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন পেটার ভাইস প্রেসিডেন্ট।
এ রকম ঘটনা এটাই প্রথম নয়, এর আগে ২০১৩ সালে চীনের একটি চিড়িয়াখানায় এক লোমশ কুকুরকে সিংহ বলে চালিয়ে দেওয়া হয়েছিল। শুধু তাই নয়, দর্শনার্থীদের সামনে ছদ্মবেশী সেই সিংহ কুকুরের ডাক দিয়ে নিজের পরিচয় ফাঁস করে দিয়েছিল।