কেনিয়ায় জলহস্তীর কামড়ে পর্যটকের মর্মান্তিক মৃত্যু
কেনিয়ার নাইরোবিতে হ্রদে জলহস্তীর ছবি তুলতে গিয়ে বুকে কামড় খেয়ে তাইওয়ানের এক পর্যটকের মৃত্যু হয়েছে। একই ঘটনায় আহত হয়েছেন আরো এক পর্যটক।
গতকাল রোববার নাইরোবির উত্তর-পশ্চিমে ৯০ কিলোমিটার দূরের নাইভাশা হ্রদে ওই দুর্ঘটনা ঘটে বলে বিবিসি জানায়।
জানা যায়, চং মিং চুয়াং (৬৬) নামের নিহত ওই পর্যটক বন্যপ্রাণী সংরক্ষণাগার হিসেবে ব্যবহৃত হ্রদটিতে আক্রমণকারী জলহস্তীটিকে অনুসরণ করছিলেন। সে সময় আকস্মিক প্রাণীটি তাঁর বুকে কামড় বসায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হ্রদের সোপা হোটেলসংলগ্ন অংশে ছবি তোলার উদ্দেশ্যে ওই দুই পর্যটক জলহস্তীটির খুব কাছাকাছি চলে যান। সে সময় চং মিংয়ের বুক বরাবর সজোরে কামড় বসায় জলহস্তীটি। বুক থেকে অঝোরে রক্ত ঝরতে থাকা অবস্থায় তৎক্ষণাৎ তাঁকে হাসপাতালে নিলেও বাঁচানো সম্ভব হয়নি। কেবল এ বছরই ওই এলাকায় জলহস্তীর কামড়ে ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা যায়।
য়ু পেং তে নামের অপর পর্যটক আহত হলেও তা গুরুতর নয় বলে জানা গেছে। পরে তাঁকে নাইভাশা হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
কেনিয়াভিত্তিক সংবাদপত্র ‘স্টার’কে নাইভাশা নৌকা মালিক সংঘের সভাপতি ডেভিড কিলো জানান, সম্প্রতি পানির উচ্চতা বেড়ে যাওয়ায় হ্রদে জলহস্তীদের চারণভূমির অংশ কমে গেছে। ফলে তারা স্থলভাগের দিকে, খামার ও হোটেল প্রাঙ্গণ অংশে উঠে আসছে। এতে করে মানুষের সঙ্গে তাদের মুখোমুখি হওয়ার ঘটনা বাড়ছে।
এদিকে, এ হামলার ঘটনায় কেনিয়ার বন্যপ্রাণী সেবা অধিদপ্তর জানায়, জলহস্তীটিকে অনুসরণ করতে থাকায় সেটি উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিল।
বন্যপ্রাণী সেবা অধিদপ্তর আক্রান্ত দুই পর্যটককে শুরুতে চায়নিজ হিসেবে চিহ্নিত করে। পরে তাইওয়ানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ওই দুই ব্যক্তিকে নিজ দেশের নাগরিক বলে নিশ্চিত করে।
স্থলবাসী স্তন্যপায়ী প্রাণীদের মধ্যে জলহস্তী সবচেয়ে প্রাণঘাতী বলে জানা যায়। ধারালো দাঁতওয়ালা জলহস্তীদের ওজন দুই হাজার ৭৫০ কেজি, অর্থাৎ তিন টন পর্যন্ত হয়ে থাকে। আফ্রিকায় প্রতিবছর প্রায় ৫০০ মানুষ জলহস্তীর আক্রমণের শিকার হয়ে মারা যান।