মালয়েশিয়ায় বিষাক্ত মদপানে বাংলাদেশিসহ ২১ জনের মৃত্যু
মালয়েশিয়ায় বিষাক্ত মদ পান করে বাংলাদেশিসহ অন্তত ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশটির কর্মকর্তারা। এ ঘটনায় আরো অনেকেই বর্তমানে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
গতকাল বুধবার মালয়েশিয়ার কর্মকর্তারা ওই খবর জানান বলে রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। নিহত ও আক্রান্তদের বেশিরভাগই এশিয়ার বিভিন্ন দেশের নাগরিক বলে জানা যায়।
মালয়েশিয়ার স্বাস্থ্যমন্ত্রী জুলকেফলি আহমদ জানান, রাজধানী কুয়ালালামপুর ও তার পার্শ্ববর্তী সিলানগর অঞ্চলে বিষাক্ত মদ পান করে আক্রান্ত হওয়ার ৫৭টি ঘটনা ঘটেছে। এ সংখ্যা আরো বাড়তে পারে। প্রশাসনিক রাজধানী পুত্রজায়ায় এক সংবাদ সম্মলনে তিনি এ কথা বলেন।
অন্য মদের দাম অনেক বেশি হওয়ায় মালয়েশিয়ায় দরিদ্র অভিবাসী শ্রমিকদের মধ্যে ঘরে বানানো সস্তা মদ বেশ জনপ্রিয়। কৃত্রিমভাবে মদ প্রস্তুত করার প্রধানতম একটি উপাদান ‘মিথানল’, যা সামান্য পরিমাণে ব্যবহার করা ক্ষতিকর নয়। কিন্তু বেশি পরিমাণে মিথানল পান একেবারে প্রাণঘাতী।
কর্তৃপক্ষ জানায়, বেশ কিছু অ্যালকোহল ও অ্যালকোহলমিশ্রিত পানীয়ের নমুনা পরীক্ষা করে সেগুলোতে মাত্রাতিরিক্ত মিথানলের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। এসব সস্তা মদ একই সঙ্গে অনেক বেশি পরিমাণে প্রস্তুত করে বাজারজাত করা হয়। আর সস্তা হওয়ায় মানুষ এগুলো সংরক্ষণে আগ্রহী হয়। এ নিয়ে কর্তৃপক্ষ নিজেদের উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরো জানান, নিহত শ্রমিকদের মধ্যে পাঁচজন মালয়েশিয়ার, বাদবাকিরা বাংলাদেশ, ইন্দোনেশিয়া, মিয়ানমার ও নেপালের নাগরিক।
সিলানগর পুলিশপ্রধান মাজলান মনসুর এক বিবৃতিতে জানান, বিষাক্ত এসব মদ উদ্ধার ও বাজারজাত ঠেকাতে পুলিশ ১২টি জায়গায় অভিযান চালিয়ে প্রায় তিন হাজার হুইস্কি ও বিয়ারের বোতলসহ সাত ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে।
এ নিন্দনীয় ঘটনার তদন্ত চলছে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। এ অপরাধে কোনো ব্যক্তিকে ১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড অথবা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করার বিধান রয়েছে।
এ বছর এপ্রিলেই মালয়েশিয়ার পার্শ্ববর্তী দেশ ইন্দোনেশিয়ায় মশা মারার ওষুধ দিয়ে ঘরে তৈরি এক ধরনের মদ পান করে ৫০ ব্যক্তির প্রাণহানি হয়।