এবার গাঁজাকে বৈধতা দিল দক্ষিণ আফ্রিকা
দক্ষিণ আফ্রিকার সর্বোচ্চ আদালত ব্যক্তিগত পরিসরে পূর্ণবয়স্কদের জন্য গাঁজা সেবনকে বৈধ বলে রায় দিয়েছেন। তবে দেশটির জাতীয় সংসদ চাইলে তা পরিবর্তন করতে পারবে। এবং সে জন্য নিয়মানুযায়ী সংসদকে দুই বছরের সময় বেঁধে দিয়েছেন আদালত।
দেশটির সরকার অবশ্য মাদক জনগণের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর উল্লেখ করে গাঁজার বৈধতার বিরোধিতা করেছে।
অন্যদিকে সাংবিধানিক আদালতের এমন রায়ে ‘গাঁজা এখন শৃঙ্খলমুক্ত’ বলে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন এর পক্ষের আন্দোলনকারীরা।
মাদক ব্যবহারের অভিযোগে বিচারের সম্মুখীন হওয়া তিনজন গাঁজা সেবনকারীর করা মামলায় তাঁরা দাবি করেন, মাদকের ওপর এই নিষেধাজ্ঞা ‘তাদের জীবনের ব্যক্তি পরিসরে অন্যায়ভাবে হস্তক্ষেপ করে’।
উপপ্রধান বিচারপতি রেমন্ড জোন্ডো তাঁর দেওয়া রায়ে বলেছেন, ব্যক্তিগত পরিসরে প্রাপ্তবয়স্ক কেউ যদি গাঁজা সেবন করে বা এতে আসক্ত হয় কিংবা তা সংরক্ষণ করে, তা আইনত দণ্ডনীয় হবে না।
তবে গণপরিসরে তা বেচাকেনা বা সেবন ও সংরক্ষণ নিষিদ্ধই রয়ে গেছে। এবং একজন ব্যক্তিগত পরিসরে কী পরিমাণ গাঁজা উৎপাদন, সংরক্ষণ বা সেবন করতে পারবে, তাও নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়নি।
দক্ষিণ আফ্রিকায় গাঁজাকে ‘ডাগ্গা’ নামে ডাকা হয়। এর বৈধতার পক্ষে আন্দোলনকারী ‘ডাগ্গা পার্টি’র প্রধান জেরেমি অ্যাক্টন বলেন, ‘জনপরিসরে গাঁজা বহনেরও বৈধতা দেওয়া জরুরি।’
যেহেতু এই রায়ে গাঁজার জনপরিসরে বহন ও বেচাকেনাকে বৈধতা দেওয়া হয়নি, তাই সরকার তা থেকে কর বসিয়ে আয় করতে পারবে না।
জনস্বাস্থ্য এবং আইনশৃঙ্খলার দোহাই দিয়ে সরকারের আপত্তির মুখেও এই রায় বলে দিচ্ছে, দক্ষিণ আফ্রিকার বহু সংগ্রামের পথ ধরে অর্জিত বর্তমান সংবিধানটি বিশ্বের অন্যতম উদার সংবিধানগুলোর একটি। রায় এটাও প্রমাণ করে, ব্যক্তি অধিকারের বিষয়টি কতটা গুরুত্বের সঙ্গে দেখে থাকে দেশটি।
এর আগে চিকিৎসা-সংশ্লিষ্ট প্রয়োজনে গাঁজার ব্যবহারকে বৈধতা দেয় আফ্রিকার দুটি দেশ জিম্বাবুয়ে ও লেসেথো।