সংকটের মধ্যেই রানাতুঙ্গার দেহরক্ষীর গুলিতে বিক্ষোভকারী নিহত
চলমান রাজনৈতিক সংকটের মধ্যে শ্রীলঙ্কার সদ্য বরখাস্ত হওয়া তেলসম্পদমন্ত্রী অর্জুনা রানাতুঙ্গার দেহরক্ষীর গুলিতে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছে।
আজ সোমবার বিক্ষোভকারীদের বাধা পেরিয়ে সদ্য বরখাস্ত হওয়া মন্ত্রিসভার তেলসম্পদমন্ত্রী অর্জুনা রানাতুঙ্গা সিলন পেট্রলিয়াম করপোরেশন ভবনে তাঁর মন্ত্রণালয়ে প্রবেশ করতে চাইলে এ ঘটনা ঘটে। বিক্ষোভরতদের লক্ষ্য করে গুলি করেন মন্ত্রীর এক দেহরক্ষী।
এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ ৩৪ বছর বয়সী এক ব্যক্তিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এ ছাড়া এতে অপর দুজন আহত হয়েছে। রানাতুঙ্গার ওই দেহরক্ষীকে আটক করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, এ বিষয়ে তদন্ত চলছে।
শ্রীলঙ্কার জাতীয় ক্রিকেট দলের এই সাবেক ক্যাপ্টেন অর্জুনা রানাতুঙ্গাকে পুলিশের কমান্ডো বাহিনী হেলমেট ও বর্মপরিহিত অবস্থায় ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে নিয়ে যায়।
গত শুক্রবার প্রেসিডেন্ট সিরিসেনা মৈত্রিপালা দেশটির প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমসিংহেকে বরখাস্ত করে সাবেক প্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজাপক্ষেকে নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেন। মাহিন্দা রাজাপক্ষে সেদিন রাতেই প্রেসিডেন্টের কাছে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথও নেন।
বিক্রমসিংহে প্রেসিডেন্টের ঘোষণাকে আসাংবিধানিক বলে উল্লেখ করে তিনি এখনো শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী পদে বহাল রয়েছেন বলে জানালে সংকটে পড়ে দেশটি। তিনি দাবি করেন, একমাত্র জাতীয় সংসদ তাঁর প্রধানমন্ত্রীত্ব বাতিলের অধিকার রাখে।
শ্রীলঙ্কার জাতীয় সংসদে বর্তমানে রনিল বিক্রমসিংহের দল ইউনাইটেড ন্যাশনাল পার্টির সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে। পরের দিন শনিবার প্রেসিডেন্ট সংসদ স্থগিত ঘোষণা করলে সংকট ঘণীভূত হয়।
বিক্রমসিংহে জরুরি ভিত্তিতে স্পিকারের প্রতি সংসদ অধিবেশনের আহ্বান জানালে পরমুহূর্তে আগামী ১৬ নভেম্বর পর্যন্ত সংসদ স্থগিত করেন প্রেসিডেন্ট সিরিসেনা।
দেশটির জাতীয় সংসদের স্পিকার কারু জয়সুরিয়া অবশ্য প্রেসিডেন্ট সিরিসেনাকে তাঁর সংসদ স্থগিতের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছেন। সংসদ স্থগিতের ফলে সংকটময় অবস্থা তৈরি হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন স্পিকার।
অন্যদিকে মাহিন্দা রাজাপক্ষের সমর্থকরা দেশটির জাতীয় প্রচারমাধ্যমগুলোর দখল নিয়েছে। এতে আন্তর্জাতিক মহলের নিকট শ্রীলঙ্কার ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষুণ্ণ হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির জাতীয় সংসদের স্পিকার কারু জয়সুরিয়া।
এ ছাড়া মন্ত্রিসভার সদস্যদের কার্যালয়ে প্রবেশে বাধা দিচ্ছেন মাহেন্দা রাজাপক্ষের সমর্থকরা। অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রীর রাষ্ট্রীয় বাসভবন টেম্পল ট্রিজ ঘিরে রেখেছে বিক্রমসিংহের সমর্থকরা।
বিগত তিন বছর ধরে নানা বিষয়ে মতপার্থক্য হচ্ছিল বলে প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে বিক্রমসিংহেকে সরিয়ে দিয়েছেন বলে সর্বশেষ টেলিভিশনে দেওয়া বক্তব্যে জানান প্রেসিডেন্ট মৈত্রিপালা সিরিসেনা।