শ্রীলঙ্কা সংকট : সংসদ অধিবেশন আহ্বান সিরিসেনার
সংসদ স্থগিতের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এলেন শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট মৈত্রিপালা সিরিসেনা। গতকাল বৃহস্পতিবার কলম্বোয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে শ্রীলঙ্কার নতুন প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষে বলেন, প্রেসিডেন্ট মৈত্রিপালা সিরিসেনা সংসদ অধিবেশন ডাকার সিদ্ধান্তের কথা তাঁকে জানিয়েছেন।
শ্রীলঙ্কার জাতীয় সংসদের স্পিকার কারু জয়সুরিয়া জানিয়েছেন, আগামী সপ্তাহে সংসদ অধিবেশন ডাকা হতে পারে। এনডিটিভির এমনটি খবরে বলা হয়েছে।
ক্রমাগত চাপের মুখে পড়ে প্রেসিডেন্ট সিরিসেনা এমন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। সংসদ স্থগিতের ঘোষণা দিলে প্রেসিডেন্টকে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানান দেশটির সংসদের স্পিকার।
প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমসিংহের বরখাস্ত করা নিয়েও যেমন প্রশ্ন উঠেছে, একই সঙ্গে জাতীয় সংসদে তাঁর দলের সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় প্রেসিডেন্ট সিরিসেনার সংসদ স্থগিতের সিদ্ধান্তও ঘরে-বাইরে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে।
গত শুক্রবার ভারতপন্থী প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমসিংহেকে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে বরখাস্ত করে সাবেক প্রেসিডেন্ট চীনপন্থী মাহিন্দা রাজাপক্ষেকে নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ দেন প্রেসিডেন্ট মৈত্রিপালা সিরিসেনা। সেদিন রাতেই রাজাপক্ষে প্রেসিডেন্টের হাতে প্রধানমন্ত্রী পদে শপথও নেন।
পরদিন শনিবার বিক্রমসিংহে এই সিদ্ধান্তকে অসাংবিধানিক বলে আখ্যা দিয়ে নিজেকে প্রধানমন্ত্রী পদে বহাল রয়েছেন বলে ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, একমাত্র জাতীয় সংসদই তাঁকে প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে সরানোর এখতিয়ার রাখে।
প্রধানমন্ত্রীর রাষ্ট্রীয় বাসভবনে অবস্থান নিয়ে বিক্রমসিংহে সংসদ জরুরি সংসদ অধিবেশন আহ্বানে স্পিকারের প্রতি আহ্বান জানান। পরক্ষণেই প্রেসিডেন্ট সিরিসেনা ১৬ নভেম্বর পর্যন্ত জাতীয় সংসদ স্থগিত ঘোষণা করেন।
সংসদ স্থগিত এবং এর আগে প্রধানমন্ত্রীকে বরখাস্তের ঘটনায় গভীর সাংবিধানিক ও রাজনৈতিক সংকটে পড়ে দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কা। গত কয়েক দিনে সংকট আরো ঘনীভূত হওয়ায় দেশটির ওপর দিন দিন আন্তর্জাতিক চাপ বাড়তে থাকে।
এ পরিস্থিতিতে শনিবার দেশটির তেলসম্পদমন্ত্রী অর্জুনা রানাতুঙ্গার মন্ত্রণালয়ে প্রবেশে বাধার মুখে তাঁর দেহরক্ষীর গুলিবর্ষণে দুই বিক্ষোভকারীর মৃত্যু হয়।
বুধবার শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোয় সিরিসেনার সমর্থকরা জাতীয় সংসদ অধিবেশনের দাবিতে বিক্ষোভে অংশ নেয়।
অন্যদিকে সংকটের শুরুর দিন শুক্রবার থেকেই মাহিন্দা রাজাপক্ষের সমর্থকরা দেশটির প্রচারমাধ্যমের কার্যালয় দখলসহ রাজপথে অবস্থান নেয়।