তিমি করল বমি, তিনি হলেন ধনী!
নিজের পোষা কুকুরকে নিয়ে উত্তর ইংল্যান্ডের ওয়েলস সমুদ্রসৈকতে বৈকালিক ভ্রমণে বেরিয়েছিলেন এক লোক। হঠাৎ কুকুরটি দৌড়ে গিয়ে সাগরে ভেসে আসা একতাল ‘চটচটে আবর্জনার’ পাশে দাঁড়িয়ে চিৎকার শুরু করল। কাছে গিয়ে অনুভব করেন সেই বস্তুটির তীব্র সুগন্ধ। অবশেষে সেই ‘আবর্জনা’ হাতে নিয়ে বাড়ি ফেরেন কুকুরের মালিক। আর ফেরার পর জানলেন কুকুরের বদৌলতে অমূল্য রতন পেয়ে গেছেন তিনি।
বিশেষজ্ঞের বরাত দিয়ে যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফ জানিয়েছে, দৈর্ঘ্যে আট ইঞ্চি প্রস্থে ছয় ইঞ্চি আর ১.১ কেজি ওজনের ওই অমূল্য রতনটির নাম ‘অ্যাম্বারগ্রিজ’। সুগন্ধি তৈরির এই দামি উপাদানটি আসলে তিমি মাছের ‘বমি’।
এই ‘বমি’র গন্ধ নাকি এতটাই মোহময় যে বিশ্বের বিখ্যাত সব সুগন্ধি প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানের সবচেয়ে দামি পারফিউমগুলোর অত্যাবশ্যকীয় উপাদান এই অ্যাম্বারগ্রিজ। তবে প্রসাধনীর বাইরে বিরল কিছু রোগের ওষুধ তৈরিতেও এর ব্যবহার রয়েছে। এ ছাড়া কিছু বিশেষ ধরনের খাদ্য ও মদ তৈরি এবং ভেষজ ও হোমিওপ্যাথি ওষুধেও এর ব্যবহার করা হয়।
খুঁজে পাওয়া ওই ‘বমি’ নিলামে উঠিয়েছেন এর মালিক। লন্ডনের বিখ্যাত নিলাম সংস্থা ক্রিস্টিজের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত শুক্রবার ১.১ কেজি ওজনের তিমির সেই বমি বিক্রি হয়েছে বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২০ লাখ টাকায় (১৬ হাজার ৭০০ ব্রিটিশ পাউন্ড)।
বিশেষজ্ঞরা জানান, মূল্যবান এই পদার্থটি তিমি মাছের ক্ষুদ্রান্তে প্রাকৃতিক বিবর্তনের নিয়মে উৎপন্ন হয়। তিমির জীবদ্দশায় এই অ্যাম্বারগ্রিজ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই পদার্থটিই তিমির পাকস্থলীকে স্কুইড ও অন্যান্য প্রাণীর শরীরের ধারালো অংশে কেটে যাওয়ার পর তাড়াতাড়ি সারতে সাহায্য করে। পরে শরীরে নতুন অ্যাম্বারগ্রিজ উৎপন্নের পর তা স্বাভাবিক নিয়মে বের করে দেয় তিমি।