শ্রীলঙ্কায় গণকবরে ২৩০টি কঙ্কাল
শ্রীলঙ্কার পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর মান্নারে এ বছরের শুরুতে সন্ধান পাওয়া গণকবরে ২৩০টিরও বেশি কঙ্কাল ছিল। একে দেশটির ইতিহাসের সবচাইতে বড় গণকবর বলে দাবি করেছেন সেখানকার বিশেষজ্ঞ ও মানবাধিকারকর্মীরা।
শ্রীলঙ্কার তামিল গোষ্ঠীর সঙ্গে সরকারের বাহিনীর যুদ্ধে ২০ হাজার মানুষ নিখোঁজ হয় বলে মানবাধিকারকর্মীরা দাবি করে থাকেন। এ ছাড়া ২০০৯ সালে শেষ হওয়া ২৬ বছর ধরে চলা এই যুদ্ধে অন্তত এক লাখ মানুষের প্রাণহানি ঘটে।
এই যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর অনেকগুলো গণকবরের সন্ধান মিললেও মান্নারের এই গণকবরে পাওয়া কঙ্কালের মানুষগুলো তামিল টাইগারদের সংঘাতের সময় নিহত কিনা তা নিশ্চিত নয়।
মান্নার শহরের প্রধান বাস টার্মিনালের কাছে এ বছরের শুরর দিকে একটি ভবনের ভিত্তি খননের সময় শ্রমিকরা মানুষের শরীরের অংশ পায়। সেখানে আগে একটি সমবায় সমিতির কার্যালয় ছিল। দেশটির এক আদালতের আদেশে বিশেষজ্ঞরা বিস্তারিত খনন করে সেখান ২৩০টিরও বেশি মানবকঙ্কাল উদ্ধার করে।
গণকবরটির উদ্ধারকাজের নেতৃত্বে থাকা ফরেনসিক প্রত্নতাত্ত্বিক বিশেষজ্ঞ ও কলম্বোর নিকটবর্তী কেলানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রাজ সোমাদেবা বিবিসিকে জানান, ‘এ পর্যন্ত ২৩০টিরও বেশি কঙ্কাল পেয়েছি। আমার মতে, এটিই আমাদের দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় গণকবর।’
গণকবরটিতে শরীরের ধ্বংসাবশেষ বাদেও মানুষের ব্যবহৃত গহনা, চীনামাটির বাসন ও ধাতব বস্তু পেয়েছেন প্রত্নতাত্ত্বিকরা। তবে মানুষের শরীরের ছিন্নভিন্ন হাড্ডি থেকে তাদের পরিচয় সণাক্ত করা দুরূহ হবে বলে জানিয়েছেন অধ্যাপক সোমাদেবা।
এর আগে ২০১৪ সালে মান্নারের বিখ্যাত থিরুকেথিস্বরম হিন্দু মন্দিরের কাছে একটি গণকবর থেকে ৯৬ জনের শরীরের অংশবিশেষ উদ্ধার করা হয়। চার বছর পেরিয়ে গেলেও ওই গণকবরের মানুষেরা কিভাবে কাদের দ্বারা নিহত হয়েছিলেন তা জানা যায়নি।
মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছে, যুদ্ধে তামিল টাইগার এবং দেশটির সরকারি বাহিনী উভয়েই বহু সাধারণ মানুষকে হত্যা করেছে। সরকার সব সময় তার বাহিনীর হত্যাকাণ্ড ও গুমের বিষয়গুলোকে নাকচ করে আসছে। ক্রমাগত চাপের মুখে সরকার এ বছর নিখোঁজ হওয়াদের নিয়ে কাজ করতে ওএমপি (অফিস অব মিসিং পারসনস) নামে একটি স্বতন্ত্র সংস্থা করে দিয়েছে।