সিরিয়ায় হামলা নিয়ে রাশিয়া-যুক্তরাষ্ট্রের কথার লড়াই
সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের বিরোধীপক্ষের ওপর আবারও বিমান হামলা চালিয়েছে রুশ বিমানবাহিনী। আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সিরিয়ার হোমস ও হামা প্রদেশে বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলোতে এ হামলা চালানো হয়। গত মঙ্গলবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন দেশটির পার্লামেন্টে সিরিয়ার হামলার অনুমোদন পাওয়ার পর বুধবার থেকে এই হামলা শুরু হয়েছে।
রয়টার্স জানিয়েছে, সর্বশেষ ১৯৭৯ সালে আফগানিস্তানে সামরিক অভিযান চালিয়েছিল রুশ সেনাবাহিনী। এবারের অভিযান শুরুর আগে রাশিয়ার পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, প্রেসিডেন্ট আসাদ সামরিক সহায়তার জন্য রাশিয়ার কাছে আবেদন জানালে সে ডাকে সাড়া দেয় পার্লামেন্ট। তবে আসাদবিরোধী নয়, বরং মধ্যপ্রাচ্যের ইসলামপন্থী জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেটের (আইএস) বিরুদ্ধে এ সামরিক অভিযান পরিচালনা করছে তারা। তবে গত বুধবার হামলা শুরুর পর যুক্তরাষ্ট্র আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছে, আইএসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের নাম করে রাশিয়া আসলে প্রেসিডেন্ট আসাদের বিরোধীদের নির্মূল করতে চায়।
যুক্তরাষ্ট্র আরো দাবি করে, রাশিয়ার উচ্চকক্ষে বিষয়টি অনুমোদিত হওয়ার পর ওয়াশিংটনকে এক ঘণ্টা আগে নোটিশ দিয়ে এ হামলা চালানো হয়েছে। আর যেসব এলাকায় হামলা চালানো হচ্ছে, তা আইএস নয় বরং স্বৈরশাসক আসাদবিরোধীদের নিয়ন্ত্রিত। আর এ হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে দেশটি। অপরদিকে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বিবৃতি দিয়ে জানাচ্ছে, আইএসের সামরিক স্থাপনা, সরঞ্জাম, যান ও জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ করাই দেশটির বিমানবাহিনীর লক্ষ্য। বেসামরিক জনগোষ্ঠী অধ্যুষিত কোনো এলাকায় হামলা চালাবে না রাশিয়া।
এদিকে স্থানীয় সূত্রে বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, আজকের বিমান হামলায় হামা প্রদেশে অন্তত ২৫ জন বেসামরিক নাগরিক মারা গেছেন। এ ছাড়া গতকালের হামলাতেও বেশ কয়েকজন হতাহত হয়েছিলেন। তবে হতাহতের সংখ্যা এখনো নির্দিষ্ট করে জানায়নি সংবাদমাধ্যমটি।
আরব দুনিয়ার দেশ সিরিয়ায় চার বছর ধরে সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ চলছে। গৃহযুদ্ধে এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন আড়াই লক্ষাধিক মানুষ। এ ছাড়া ঘর হারিয়ে শরণার্থী হয়েছেন এক কোটির বেশি মানুষ। এর ফলশ্রুতিতেই ২০১১ সাল থেকে দেশটিতে জঙ্গি সংগঠন আইএস মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে। বর্তমানে আইএসসহ বেশ কয়েকটি সশস্ত্র জঙ্গিগোষ্ঠী আসাদ সরকারকে হটাতে যুদ্ধে লিপ্ত রয়েছে।