যুক্তরাজ্যের অ্যানগাস ডেটন পেলেন অর্থনীতিতে ‘নোবেল’
আলফ্রেড নোবেলের স্মরণে দেওয়া পুরস্কার ‘স্যাভেরিজেস রিকসব্যাংক প্রাইজ-২০১৫’ পেয়েছেন যুক্তরাজ্যের প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটির অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক অ্যানগাস ডেটন। আজ সোমবার স্থানীয় সময় দুপুর ১টায় সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমে এক সংবাদ সম্মেলনে রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অব সায়েন্স দারিদ্র্য, উন্নয়ন ও জনকল্যাণ বিষয়ে গবেষণার জন্য তাঁকে এ পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা দেয়।
স্যার আলফ্রেড বার্নার্ড নোবেলের স্মরণে অর্থনীতির নোবেল বলে পরিচিত এ পুরস্কারটি দেয় সুইডেনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ১৯৬৯ সালে প্রথম অর্থনীতিতে মর্যাদাসম্পন্ন এ পুরস্কার দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সুইডেনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তবে বিশেষ ক্ষমতাবলে সুইডেনের রয়্যাল একাডেমি অব সায়েন্স পুরস্কার দেওয়ার বিষয়টি পরিচালনা করে।
পুরস্কারের ঘোষণার আগে সুইডেনের রয়্যাল একাডেমি অব সায়েন্স কমিটি জানিয়েছে, ভোগ ও দারিদ্র্য বিষয়ে তাঁর বিশ্লেষণী কাজের জন্যই এই পুরস্কার। দীর্ঘদিন ধরেই এ পুরস্কারের সম্ভাব্য প্রাপকের তালিকায় নাম ছিল ডেটনের।
সত্তর বছর বয়সী এই অর্থনীতিবিদ ১৯৮৩ সালে নিউজার্সি অঙ্গরাজ্যের প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটিতে অর্থনীতি ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে যোগ দেন। গৃহস্থালির স্তরে কীভাবে ভোগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, তা ডেটনের গবেষণার প্রধান কেন্দ্রবিন্দু। পাশাপাশি, দারিদ্র্য, স্বাস্থ্য ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিয়েও তাঁর উল্লেখযোগ্য কাজ রয়েছে।
ডেটনের বিশ্লেষণী কাজের ব্যাপারে সুইডিশ একাডেমি অব সায়েন্সের পক্ষ থেকে বলা হয়, জনকল্যাণ সাধনে এবং দারিদ্র্য কমাতে অর্থনৈতিক নীতিমালা প্রণয়নের ক্ষেত্রে আমাদের প্রথমেই বুঝতে হবে প্রত্যেকের আলাদা ভোগের পছন্দের বিষয়টি। এই বিষয়টিই অন্য অনেকের চেয়ে বিস্তারিত এবং বিশদভাবে বুঝিয়েছেন ডেটন। তার বিভিন্ন গবেষণা ব্যষ্টিক অর্থনীতি, সামষ্টিক অর্থনীতি ও উন্নয়নমূলক অর্থনীতির ক্ষেত্রকে পাল্টে দিতে সহায়তা করেছে।
ডেটন ১৯৪৫ সালে যুক্তরাজ্যের এডিনবার্গে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭৪ সালে ইউনিভার্সিটি অব ক্যামব্রিজ থেকে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। জন্মসূত্রে তিনি যুক্তরাজ্যের নাগরিক হলেও তাঁর মার্কিন নাগরিকত্বও রয়েছে।
গত বছর অর্থনীতিতে এ সম্মানজনক পুরস্কার জিতেছিলেন ফ্রান্সের অর্থনীতিবিদ জ্যঁ তিরোল। বাজার অর্থনীতি নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ মতবাদের জন্য তাকে নোবেল দেওয়া হয়েছিল।
১৯৬৯ সালে অর্থনীতিতে ‘স্যাভেরিজেস রিকসব্যাংক’ পুরস্কার প্রবর্তিত হওয়ার পর নরওয়ের অর্থনীতিবিদ রাগনার ফ্রিশচ এবং নেদারল্যান্ডসের অর্থনীতিবিদ জন টিনবারজেন যুগ্ম ভাবে প্রথমবার অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার লাভ করেছিলেন।
প্রথম বাঙালি হিসেবে ১৯৯৮ খ্রিস্টাব্দে অধ্যাপক অমর্ত্য সেন ‘স্যাভেরিজেস রিকসব্যাংক’ পুরস্কার অর্জন করেছিলেন। ১৯৬৯ খ্রিস্টাব্দ থেকে শুরু করে ২০১৫ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ৪৭ দফায় মোট ৭৪ জন অর্থনীতিবিদকে এই পুরস্কারে ভূষিত করা হয়েছে।