অভিবাসন সংকট : তুরস্কের জন্য কর্মপরিকল্পনা ইইউর
অভিবাসন সংকট মোকাবিলায় তুরস্কের জন্য একটি কর্মপরিকল্পনায় অনুমোদন দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ) দেশগুলো। এতে ইউরোপে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের জোয়ার কিছুটা কমানো যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। স্থানীয় সময় গতকাল বৃহস্পতিবার বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে এক বৈঠকে এ কর্মপরিকল্পনা চূড়ান্ত হয়েছে।
চলতি বছর সমুদ্রপথে প্রায় ছয় লাখ শরণার্থী ইউরোপে পৌঁছেছে। এদের অনেকেই তুরস্ক হয়ে গ্রিসে প্রবেশ করেছে। বেশ কয়েকটি দাবির পরিপ্রেক্ষিতে তুরস্ক অভিবাসন সংকট মোকাবিলায় সহায়তা করতে রাজি হয়েছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী তুরস্ক সরকারকে ৩৪০ কোটি মার্কিন ডলার অর্থ-সহায়তা দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে ইইউ, যা তুরস্কে আসা শরণার্থীদের আশ্রয়ে সহায়তা করবে। সে সঙ্গে তুরস্কের নাগরিকদের জন্য ইউরোপের যেকোনো দেশে ভ্রমণ ভিসা সহজ করা হবে।
শরণার্থী সংকট মোকাবিলায় এ প্রস্তাবকে আশাব্যঞ্জক ও ইতিবাচক হিসেবে বর্ণনা করেছেন ইউরোপীয় ইউনিয়ন কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড টাস্ক। বৈঠক শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, এ পরিকল্পনার ফলে ইউরোপের যেকোনো দেশে আসতে ইচ্ছুক শরণার্থীর জোয়ার কিছুটা হলেও কমবে বলে আশাবাদী জোটের নেতারা।
বুলগেরিয়ার বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর থেকে জানা গেছে, গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে তুরস্ক থেকে বুলগেরিয়া প্রবেশের সময় এক আফগান ব্যক্তি গুলিতে নিহত হয়েছেন। বুলগেরিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর উদ্ধৃতি দিয়ে এএফপির খবরে বলা হয়েছে, ওই ব্যক্তি অভিবাসনপ্রত্যাশীর একটি বড় দলের একজন। এ দলটি বুলগেরিয়া প্রবেশের চেষ্টা করছে।
শরণার্থীদের জন্য তুরস্ককে অর্থ-সহায়তার প্রস্তাব সম্পর্কে জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মেরকেল বলেন, ‘অভিবাসন সংকট মোকাবিলায় এই অর্থ বেশি নয়। কিন্তু আমরা এটি বলতে পারি না, আমরা কোনো কিছু অর্জন করতে পারিনি।’ এ সপ্তাহে তুরস্ক সফরে যাবেন তিনি।
ইইউর সূত্র থেকে জানা গেছে, তুরস্কের সঙ্গে তড়িঘড়ি করে চুক্তি করার ব্যাপারে কয়েকটি দেশ সতর্ক করেছিল। এই দেশগুলোর মধ্যে গ্রিস, সাইপ্রাস ও ফ্রান্স রয়েছে।
তুরস্ক প্রায় ২০ লাখ অভিবাসীকে জায়গা দিয়েছে। এদের বেশির ভাগই যুদ্ধরত সিরিয়া থেকে পালিয়ে এসেছে। তুরস্ক সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে শরণার্থীদের জন্য একটি আন্তর্জাতিক ‘নিরাপদ অঞ্চল’ প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়েছে। কিন্তু টাস্ক বলেছেন, সিরিয়ায় লড়াইয়ে রাশিয়া জড়িয়ে পড়ায় এ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন কঠিন হয়ে পড়েছে।