‘বড়সড় গোয়েন্দা ব্যর্থতার’ দায় স্বীকার শ্রীলঙ্কা সরকারের
শ্রীলঙ্কায় ইস্টার সানডেতে গির্জা ও হোটেলে সিরিজ বোমা হামলার ঘটনায় ‘বড়সড় গোয়েন্দা ব্যর্থতার’ কথা স্বীকার করেছে দেশটির সরকার।
আজ বৃহস্পতিবার বিবিসিতে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে এ কথা জানা যায়।
চলতি মাসের শুরুর দিকে সম্ভাব্য হামলার ব্যাপারে ভারতীয় গোয়েন্দারা শ্রীলঙ্কান গোয়েন্দাদের সতর্ক করেছিল। কিন্তু তার পরও কর্তৃপক্ষ সে তথ্য যথাযথভাবে সবাইকে জানানো ও সাবধানতা অবলম্বনে ব্যর্থ হয়েছে বলে শ্রীলঙ্কার পার্লামেন্টে জানানো হয়।
গোয়েন্দা ব্যর্থতা প্রসঙ্গে প্রতিরক্ষা প্রতিমন্ত্রী রুয়ান জয়াবর্ধনে বলেন, ‘আমাদের গোয়েন্দা ব্যর্থতার দায় নিতে হবে, যদি গোয়েন্দাদের কাছে থাকা তথ্য যথাসময়ে যথাযথ লোকজনের কাছে থাকত, তাহলে হয়তো ওই হামলা এড়ানো বা অন্তত ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কমানো যেতে পারত।’
শ্রীলঙ্কান পার্লামেন্টের নেতা লক্ষ্মণ কিরিয়েলা বলেন, জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা ইচ্ছাকৃতভাবে সম্ভাব্য হামলার তথ্য কাউকে জানাননি।
‘কিছু উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে গোয়েন্দা তথ্য লুকিয়েছেন। তথ্য জানা ছিল, কিন্তু জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা যথাযথ পদক্ষেপ নেননি,’ বলেন কিরিয়েলা।
চলতি মাসের ৪ তারিখ ভারতীয় গোয়েন্দারা শ্রীলঙ্কার উচ্চপর্যায়ে সম্ভাব্য হামলার ব্যাপারে সতর্কতা জানান। রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে ওই বার্তা পাননি।
এ ঘটনায় এরই মধ্যে প্রতিরক্ষা সচিব হেমাসিরি ফার্নান্দো ও পুলিশের মহাপরিদর্শক পুজিথ জয়াসুন্দরাকে বরখাস্ত করেছেন প্রেসিডেন্ট মৈথ্রিপালা সিরিসেনা।
শ্রীলঙ্কার পুলিশপ্রধান পুজিথ জয়াসুন্দরার। বোমা হামলার দিনই তিনি জানিয়েছিলেন, পুলিশের কাছে আগেই ওই ব্যাপারে তথ্য ছিল। একই সঙ্গে দেশটির প্রতিরক্ষা সচিব হেমাসিরি ফার্নান্দোকেও পদত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গত রোববার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোসহ দেশটির বিভিন্ন এলাকায় গির্জা ও হোটেলে সব মিলিয়ে আটটি বিস্ফোরণ ঘটে। ধর্মীয় উৎসব ইস্টার সানডে উপলক্ষে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীরা গির্জায় থাকা অবস্থায় বিস্ফোরণগুলো ঘটে। এতে ৩৫৯ জন নিহত ও প্রায় ৫০০ জন আহত হন।
ওই ঘটনার দায় স্বীকার করেছে আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন তথাকথিত ইসলামিক স্টেট (আইএস)। তারা এ ঘটনার মূল হোতাসহ সাতজনের ছবিও প্রকাশ করেছে।