স্বামীর পর স্ত্রীও সন্তানদের নিয়ে আত্মঘাতী!
শ্রীলঙ্কায় আত্মঘাতী বোমা হামলার পেছনে এক কোটিপতি মুসলিম ব্যবসায়ীর পরিবার জড়িত আছে বলে জানিয়েছে তদন্তকারীরা। গত রোববার বোমা হামলার পরই ওই পরিবারের বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্টে তল্লাশি চালায় পুলিশ।
ওই সময় তিন সন্তানসহ আত্মঘাতী হন ওই ব্যবসায়ীর ছেলের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী ফাতিমা। ওই সময় তিন পুলিশ কর্মকর্তাও নিহত হন।
আজ বৃহস্পতিবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম দ্য নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
শ্রীলঙ্কার ওই ধনকুবেরের নাম ইউসূফ ইব্রাহিম। তিনি মসলা ব্যবসার সঙ্গে জড়িত।
অভিযোগ আছে, ইউনুসের দুই ছেলে ইনসাফ ইব্রাহিম ও ইলহাম ইব্রাহিম ইস্টার সানডেতে কলম্বোর সিনামন হোটেল ও সাংরি-লা হোটেলে আত্মঘাতী হামলা চালায়।
জানা যায়, ইউসুফের ছয় ছেলে ও তিন মেয়ে রয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ তাঁকে আটক করেছে।
এই হামলার পরই রাজধানীতে ইব্রাহিম পরিবারের বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্টে তল্লাশি চালাতে যায় পুলিশ। ওই সময় ইনসাফ ইব্রাহিমের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী ফাতিমা তাঁর তিন সন্তানসহ আত্মঘাতী বিস্ফোরণ চালায়। ওই বিস্ফোরণে নিহত হন তিন পুলিশ কর্মকর্তাও।
স্থানীয়রা জানান, এই পরিবার অনেকদিন ধরে কলম্বোতে বসবাস করে আসছে। হামলাকারীদের বাবা ইউসুফ ইব্রাহিম শ্রীলঙ্কার বামপন্থী দল জনতা ভিমুখী পেরামুনা (জেভিপি) পার্টির একজন নেতা। তিনি এর আগে নির্বাচনও করেছিলেন।
মসলা কোম্পানিটির একটি সূত্র জানায়, তিন বছর আগেও এত কট্টর ছিলেন না ইনসাফ ইব্রাহিম। এরপর তাঁর ছোট ভাই ইলহাম ইব্রাহিম নানাভাবে তাকে উদ্বুদ্ধ করতে থাকে। এর পর থেকেই ওই মসলা কোম্পানির মুসলমান কর্মচারীদের পোশাক-পরিচ্ছেদ নিয়ে মাঝেমধ্যেই তর্কে জড়িয়ে পড়ত ইনসাফ।
সূত্রটি জানায়, ছোট ভাই ইলহামের সঙ্গে যতই ঘনিষ্ঠ হতে থাকে, ততই পরিবর্তন ঘটতে থাকে ইনসাফের। ইলহাম স্থানীয় মুসলিম সংগঠন ন্যাশনাল তৌহিদ জামাতের (এনটিজে) একজন সদস্য ছিল। এ হামলাগুলোতে এই সংগঠনটি জড়িত বলে জানায় তদন্তকারীরা। ইনসাফকে এই সংঠনের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয় ইলহামই।
এ হামলায় দুই ভাইয়ের জড়িত থাকার পেছনে বিদেশি প্রভাব রয়েছে বলে জানায় একটি তদন্ত সূত্র।
এদিকে ওই বোমা হামলার দায় স্বীকার করেছে জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস)।
এর আগে দেশটির প্রতিরক্ষাবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী রুয়ান জয়াবর্ধনে দাবি করেন, নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের মসজিদে হামলার প্রতিশোধ নিতে শ্রীলঙ্কায় ইস্টার সানডেতে বোমা হামলা চালানো হয়েছে।
বোমা হামলায় এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৫৯ জনে।