ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়ানো হাশিমও হামলায় নিহত হন
শ্রীলঙ্কায় সিরিজ বোমা হামলার পরই একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক মাধ্যমে। সেখানে দেখা যায়, জাহরান হাশিম নামের এক ব্যক্তি ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়াচ্ছেন। যদিও তখন জানা যায়নি, এই হামলার সঙ্গে জড়িত ছিলেন তিনিও।
শ্রীলঙ্কার সরকার বলছে, গত রোববার শ্রীলঙ্কায় বোমা হামলার সঙ্গে জড়িত ছিলেন জাহরান হাশিম। এবং একটি স্থানে হামলার সময়ই তিনি নিহত হন।
আজ শুক্রবার সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট মৈথ্রিপালা সিরিসেনার বরাত দিয়ে বিবিসি জানায়, গত রোববার শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোর সাংরি-লা হোটেলে হামলা চালানোর সময় নিহত হন হাশিম। এ সময় অন্য হামলাকারী ইলহাম ইব্রাহিমের সহযোগী ছিলেন তিনি।
এর আগে তথাকথিত ইসলামিক স্টেট (আইএস) এ হামলার দায় স্বীকার করে হামলায় জড়িত সাতজনের ছবি প্রকাশ করে। সেই ছবিতে ছিলেন জাহরান হাশিমও। সেখানে দেখা যায়, সাতজনের মধ্যে ছয়জনের মুখ কাপড় দিয়ে ঢাকা। কিন্তু জাহরানের মুখে কোনো কাপড় ছিল না। সে জন্য তাঁর সম্পূর্ণ চেহারাই বোঝা যাচ্ছিল। কিন্তু তখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি যে হাশিম এ হামলার সঙ্গে জড়িত। তবে তাঁর ব্যাপারে এর আগে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করা হয়েছিল।
এ হামলায় হাশিমের জড়িত থাকার কথা বলা হলেও তিনি কোন ধরনের কাজে যুক্ত ছিলেন, তা জানা যায়নি।
হাশিম শ্রীলঙ্কার উপকূলীয় শহর কাত্তানকুদি এলাকার বাসিন্দা। হাশিমের বোন বিবিসিকে জানান, তাঁর ভাই যে কাজ করেছে, তা অনেক ভয়ানক। তিনি বলেন, ‘সে আমার ভাই হলেও আমি তার কাজকে গ্রহণ করব না। আমি তার ব্যাপারে আর কোনো কিছুই ভাবতে চাই না।’
এদিকে শ্রীলঙ্কায় বোমা হামলায় নিহতের সংখ্যা শতাধিক কমিয়ে ২৫৩ জন বলে জানায় দেশটির সরকার। এর আগে ৩৫৯ জন নিহতের কথা জানানো হয়েছিল।
দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, এর আগে নিহতের সংখ্যা গণনায় তথ্যের ভুল ছিল। হাসপাতালের মর্গ থেকে ভুল তথ্য দেওয়া হয়েছিল বলে দাবি করেন শ্রীলঙ্কার প্রতিরক্ষাবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী রুয়ান জয়াবর্ধনে।
দেশটির স্বাস্থ্যসেবাবিষয়ক এক কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানান, হামলার পর শরীরের অনেক অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় পাওয়া যায়। আর এ জন্যই নিহতের সঠিক সংখ্যা জানানো অনেক কঠিন ছিল।
এদিকে, নয়জন বোমারু এই হামলা চালিয়েছে বলে জানায় শ্রীলঙ্কার সরকার। এখন পর্যন্ত এ হামলায় জড়িত সন্দেহে ৭০ জনকে আটক করা হয়েছে বলে জানানো হয়।
এ বোমা হামলার ঘটনায় ‘বড়সড় গোয়েন্দা ব্যর্থতার’ কথা স্বীকার করেছে শ্রীলঙ্কার সরকার। তারা বলছে, এ হামলা সম্পর্কে আগেই সতর্ক করেছিল ভারত। তবে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। আর এ ঘটনায় ব্যর্থতার জন্য দেশটির প্রতিরক্ষা সচিব হেমাসিরি ফার্নান্দো ও পুলিশপ্রধান পুজিথ জয়াসুন্দরারকে পদত্যাগের নির্দেশ দিয়েছেন শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট মৈথ্রিপালা সিরিসেনা।