শ্রীলঙ্কায় হামলার এক সপ্তাহ, রোববারও বন্ধ গির্জার দরজা
ইস্টার সানডে ছিল গত ২১ এপ্রিল, রোববার। ওই রোববার খ্রিস্টানদের প্রার্থনার সময়ই ভয়াবহ বোমা হামলার ঘটনা ঘটে। আড়াই শতাধিক মানুষ নিহত হয় ওই হামলায়। সপ্তাহ ঘুরে আবারও এসেছে রোববার।
তবে শ্রীলঙ্কার খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের আজ রোববারের প্রার্থনা বাসায় বসেই করতে হবে। ওই পরামর্শই দিয়েছে দেশটির সরকার। ২১ মিলিয়ন জনসংখ্যার দেশটিতে আবারও সন্ত্রাসী হামলার আশঙ্কায় টেলিভিশনে সম্প্রচারের মাধ্যমে রোববার গির্জাগুলোতে প্রার্থনা ও সব কর্মসূচি বাতিলের ঘোষণা দেওয়া হয়।
জনসাধারণকে আপাতত মসজিদ-গির্জাসহ বিভিন্ন ধর্মীয় উপাসনালয়ে এসে প্রার্থনা আদায় না করতে পরামর্শ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। বার্তা সংস্থা এপি ও ইউএনবি এ তথ্য দিয়েছে। এ ছাড়া সাপ্তাহিক ছুটিতে ধর্মীয় উপাসনালয়ে হাজির না হওয়ার বিষয়ে সতর্ক করেছে কলম্বোতে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাস।
শ্রীলঙ্কার তিনটি গির্জা ও বিলাসবহুল হোটেলকে লক্ষ্য করে গত রোববার চালানো বোমা হামলায় আড়াই শতাধিক মানুষ নিহত ও কয়েকশ মানুষ আহত হন। দেশটিতে এক দশক আগে গৃহযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর এটিই ছিল সবচেয়ে প্রাণঘাতী ঘটনা।
হামলায় দায় স্বীকার করেছে চরমপন্থী গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস) গ্রুপ। তবে শ্রীলঙ্কার কর্মকর্তারা হামলার জন্য স্থানীয় একটি ইসলামী চরমপন্থী গোষ্ঠীকে দায়ী করেছেন।
এর আগে শুক্রবার রাতে শ্রীলঙ্কায় বোমা হামলার সঙ্গে জড়িত জঙ্গিদের আস্তানায় সেনাবাহিনীর অভিযানের পর ছয় শিশুসহ ১৫ জনের মৃতদেহ পাওয়া গেছে।
লঙ্কান পুলিশ কর্তৃপক্ষ জানায়, সাম্মান্থুরাই শহরের কাছে একটি সন্দেহভাজন আস্তানায় ইস্টার হামলাকারীরা অবস্থান করছে—এমন গোপন সংবাদ পেয়ে ওই এলাকায় সেনা অভিযান চালানো হয়। নিরাপত্তা বাহিনীর উপস্থিতি টের পেয়ে জঙ্গিরা তিনটি বোমা বিস্ফোরণ করে ও তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে।
‘বন্দুকযুদ্ধের’ সময় অন্তত চার জঙ্গি নিহত হয় বলে জানান পুলিশের মুখপাত্র রুয়ান গুনাসেকারা। তিনি বলেন, ‘নিহতদের মধ্যে আত্মঘাতী বোমা বিস্ফোরণে বেশ কয়েকজন মারা যান।’
সেনা কর্মকর্তাদের দাবি, অভিযানে জঙ্গি আস্তানা থেকে প্রচুর পরিমাণ বিস্ফোরক দ্রব্য, সামরিক পোশাক এবং ইসলামিক স্টেট (আইএস) গ্রুপের পতাকা উদ্ধার করা হয়েছে।
আইএস তাদের আমাক সংবাদ সংস্থার মাধ্যমে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘শুক্রবার রাতে অভিযানের সময় আত্মঘাতী বোমা হামলা চালায় তাদের তিনজন যোদ্ধা। তাঁরা হলেন আবু হাম্মাদ, আবু সুফিয়ান ও আবু আল-কাকা।’
আইএস দাবি করে, ‘স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র দিয়ে তারা গুলি চালায়। পরে বিস্ফোরক বেল্টের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে তারা আত্মাহুতি দেয়।’