যুদ্ধে বিধ্বস্ত বসনিয়ার মসজিদটি তিন দশক পর চালু
প্রায় তিন দশক আগে বসনিয়া যুদ্ধের সময় বিধ্বস্ত হয়েছিল দেশটির ফোকা শহরের ঐতিহ্যবাহী আলাদজা মসজিদ। তবে পুনর্নির্মাণের পর আবার প্রার্থনার জন্য চালু করা হলো মসজিদটি। মসজিদটি উদ্বোধনের সময় অংশ নেয় হাজারো মুসলিম। সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
১৫৫০ সালের দিকে তৈরি করা হয় আলাদজা মসজিদ। ১৯৯২ থেকে ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত চলা বসনিয়া যুদ্ধে বোমা হামলায় বিধ্বস্ত হয়ে যায় মসজিদটি। জাতিগত বিদ্বেষের কারণে বসনিয়ার সার্ব সেনাদের পরিকল্পনামাফিক যুদ্ধের শুরুতেই ধ্বংস করা হয় সেটি। এ যুদ্ধের সময় শুধু ফোকা শহরেই ধ্বংস করা হয়েছিল ১২টি মসজিদ।
যুদ্ধের আগে ওই শহরে মুসলমানদের সংখ্যা ছিল ৪১ হাজার, যা ছিল শহরের মোট জনসংখ্যার অর্ধেকের বেশি। তবে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানায়, বর্তমানে ওই শহরে মুসলমানদের সংখ্যা এক হাজারের কিছু বেশি।
ষোড়শ শতাব্দীতে নির্মাণ করা ওই মসজিদটিকে অটোমান স্থাপত্যশৈলীর অন্যতম নিদর্শনগুলোর একটি বলে মনে করা হতো। মসজিদটির আদি প্রস্তর শৈলীর অনেক অংশই বিস্ফোরণের পর মাটিচাপা দেওয়া হয়েছিল। তবে সেই অংশগুলো আবার মাটির নিচ থেকে বের করে আনা হয়েছে।
মসজিদে বিস্ফোরক স্থাপন করার দায়ে সাবেক এক বসনীয় সার্ব সেনার বিরুদ্ধে ২০১৮ সালে অভিযোগ আনা হয়।
মসজিদটির পুনর্নির্মাণের কাজ শেষ হতে সময় লেগেছে বেশ কয়েক বছর। তুরস্কসহ বিভিন্ন দেশ মসজিদটির পুনর্নির্মাণকাজে অর্থায়ন করে।
জাতিগতভাবে যারা সার্ব নয়, তাদের গণহত্যার কারণে বসনিয়া যুদ্ধে ফোকা শহর কুখ্যাতি লাভ করেছিল। যুদ্ধের সময় ওই শহরের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয়েছিল স্রবিনিয়ে। তবে ২০০৪ সালে বসনিয়ার আদালত ফোকা নামটি পুনর্বহালের নির্দেশ দেন।
বসনিয়ার মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ এ ঐতিহাসিক স্থানকে আবারও তৈরি করার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন।
তুরস্কের সংস্কৃতিমন্ত্রী মেহমেট নুরি এরসয় বলেন, ‘মসজিদটির পুনর্নির্মাণের মধ্য দিয়ে বোঝা যায়, বর্ণবাদ, ঘৃণা বস্তুগত বিষয়গুলোকে ধ্বংস করতে পারলেও শত বছর ধরে লালন করা সংস্কৃতিকে নষ্ট করতে পারে না।’