৩ হাজার টন প্লাস্টিক বর্জ্য ফেরত পাঠাবে মালয়েশিয়া
বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে অবৈধভাবে আমদানি করা তিন হাজার টন প্লাস্টিক বর্জ্য পুনরায় সেসব দেশে ফেরত পাঠানো হবে বলে জানিয়েছে মালয়েশিয়া সরকার।
গতকাল মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে সরকারের এ সিদ্ধান্তের কথা জানান দেশটির জ্বালানি, প্রযুক্তি, বিজ্ঞান, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রী ইয়ো বি য়িন।
রাজধানী কুয়ালালামপুরের বাইরে ক্লাং নৌ-বন্দরে আমদানি করা বর্জ্য পরিদর্শন শেষে সংবাদ সম্মেলনে পরিবেশমন্ত্রী জানান, অবৈধভাবে আমদানি করা ৬০টি বর্জ্যের কনটেইনার যে দেশ থেকে এসেছে, সেখানে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।
মন্ত্রী বলেন, ‘এসব কনটেইনার ভুয়া কাগজপত্রের ভিত্তিতে অবৈধভাবে এ দেশে আনা হয়েছে। এটা আমাদের পরিবেশবিষয়ক আইনের পরিপন্থী।’
রয়টার্সে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, চীন প্লাস্টিক বর্জ্য আমদানি নিষিদ্ধ করার পর গত বছর মালয়েশিয়া হয়ে যায় এসব বর্জ্যের অন্যতম ঠিকানা। এর আগ পর্যন্ত চীনে বছরে ৭০ লাখ টনেরও বেশি প্লাস্টিক বর্জ্য আমদানি করা হতো।
এদিকে চীন নিষিদ্ধ করার পর রাতারাতি লাইসেন্স ছাড়াই মালয়েশিয়ায় প্লাস্টিক বর্জ্য রিসাইক্লিংয়ের (পুনরায় ব্যবহার উপযোগী করা) অনেকগুলো ফ্যাক্টরি গজিয়ে ওঠে। গত দুই বছরে দেশটিতে এসব বর্জ্য আমদানি তিন গুণ বেড়েছে।
মালয়েশিয়া কর্তৃপক্ষ এসব প্লাস্টিক বর্জ্য রপ্তানিতে জড়িত অন্তত ১৪টি দেশকে চিহ্নিত করেছে। এর মধ্যে আছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাপান, ফ্রান্স, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়া।
নাম উল্লেখ না করে পরিবেশমন্ত্রী জানান, গত দুই বছরে যুক্তরাজ্যভিত্তিক একটি কোম্পানি ৫০ হাজার টনের মতো বর্জ্য মালয়েশিয়ায় রপ্তানি করেছে। এ ধরনের প্রতিষ্ঠানের ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
প্লাস্টিক বর্জ্য উৎপাদন করা বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর প্রতি ভর্ৎসনার সুরে পরিবেশমন্ত্রী বলেন, ‘যেকোনো উন্নত দেশের নাগরিকদের মতো মালয়েশিয়ার নাগরিকদেরও টেকসই সম্পদ, বিশুদ্ধ বাতাস, পানি ও পরিবেশের অধিকার আছে।’
‘আমরা উন্নত বিশ্বের দেশগুলোকে নিজেদের প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা খাত পর্যালোচনা করার এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোতে সেসব বর্জ্য রপ্তানি না করার আহ্বান জানাচ্ছি। যদি মালয়েশিয়ায় বর্জ্য রপ্তানি করা হয়, আমরা কোনোরকম ছাড় না দিয়েই তা ফেরত পাঠিয়ে দেবো,’ যোগ করেন ইয়ো বি য়িন।
এরই মধ্যে স্পেন থেকে মালয়েশিয়ায় আমদানি হওয়া দূষিত প্লাস্টিক বর্জ্যের পাঁচটি কনটেইনার ফেরত পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।