জাকির নায়েকের বহিষ্কার চান মালয়েশিয়ার মন্ত্রীরা
ভারতীয় ইসলাম প্রচারক ডা. জাকির নায়েকের স্থায়ী নাগরিকত্ব দেওয়া নিয়ে মালয়েশিয়ার মন্ত্রিসভায় আলোচনা হয়েছে। বুধবার দেশটির মন্ত্রিসভার বৈঠকে তিনজন মন্ত্রী জাকির নায়েকের বহিষ্কার চেয়েছেন বলে রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
ভারতে মানি লন্ডারিং ও বিদ্বেষমূলক বক্তব্য ছড়ানোর মামলায় সম্মুখীন হওয়ার পর তিন বছর ধরে মালয়েশিয়ায় আছেন জাকির নায়েক। সম্প্রতি তিনি বলেছেন, ভারতে হিন্দুরা মুসলমানদের চেয়ে একশগুণ বেশি অধিকার ভোগ করেন। এমন মন্তব্যের জেরে মালয়েশিয়ায় ব্যাপক বিতর্কের অবতারণা হয়েছে।
ধর্মীয় ও বর্ণবাদ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অত্যন্ত স্পর্শকাতর একটি দেশ মালয়েশিয়া, যেখানে তিন কোটি ২০ লাখ জনসংখ্যার মধ্যে ৬০ ভাগ মুসলমান। বাকি ৪০ ভাগের অধিকাংশ চীনা ও ভারতীয় এবং ধর্মের দিক দিয়ে তাদের সিংহভাগ হিন্দু।
মন্ত্রিরা দাবি করছেন, জাকির নায়েকের বক্তব্য মালয়েশিয়ার হিন্দু মুসলিমদের মধ্যে সংঘাত উসকে দিতে পারে। তবে ডা. জাকির নায়েক এমন সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দিয়েছেন।
মালয়েশিয়ার মাল্টিমিডিয়া ও যোগাযোগ বিষয়ক মন্ত্রী গোবিন্দ সিংহ দেও এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘জাকির নায়েককে মালয়েশিয়া থেকে বিতাড়নে ব্যবস্থা নেওয়ার ব্যাপারে আমরা আমাদের অবস্থান ব্যক্ত করেছি। প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ এ ব্যাপারে নোট নিয়েছেন। সিদ্ধান্তের বিষয়টি তাঁর হাতে।’
মানবসম্পদমন্ত্রী এম কুলাসেগারান এবং পানি, ভূমি ও প্রাকৃতিক সম্পদ বিষয়ক মন্ত্রী জাভিয়ের জয়াকুমারও মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর কাছে একই দাবি জানিয়েছেন।
এদিকে বুধবার এক বিবৃতিতে ডা. জাকির নায়েক বলেছেন, সাম্প্রদায়িক সংঘাত ছড়াতে ও রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে ইসলাম প্রশ্নে এবং সংখ্যালঘু হিন্দুদের প্রতি মালয়েশিয়ার সরকারের অবস্থান নিয়ে আমার প্রশংসামূলক বক্তব্যকে বিকৃত করা হচ্ছে।
গতকাল মঙ্গলবার মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ বলেন, নিরাপত্তার কারণে জাকির নায়েককে ভারতে ফেরত পাঠানো সম্ভব নয়। তবে অন্য কোনো দেশ তাঁকে নিতে চাইলে আমরা স্বাগত জানাব।
ভিন্নমতাবলম্বী ও অন্যধর্মের অনুসারীদের প্রতি বিদ্বেষমূলক ও ঘৃণা ছড়ানোর অভিযোগে ২০১৬ সালের শেষের দিকে ডা. জাকির নায়েকের ইসলামিক রিসার্চ ফাউন্ডেশনকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে ভারত সরকার।