হংকংয়ে গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলনের তিন নেতা গ্রেপ্তার
২০১৪ সালের গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলন ‘আমব্রেলা মুভমেন্ট’-এর অন্যতম দুই ছাত্রনেতা জোশুয়া ওং ও অ্যাগনেস চো এবং হংকংয়ের স্বাধীনতাকামী নেতা হিসেবে বহুল পরিচিত অ্যান্ডি চ্যানকে গ্রেপ্তার করেছে হংকং পুলিশ। আগামীকাল শনিবার হংকংয়ের স্বাধীনতাকামীদের আন্দোলন ‘আমব্রেলা প্রোটেস্ট’-এর বর্ষপূর্তির ঠিক আগে এমন ধরপাকড় করল হংকং পুলিশ।
জোশুয়া ওংয়ের রাজনৈতিক দল দ্য ডেমোসিস্টো পার্টির দাবি, আজ শুক্রবার সকালে একটি রেলস্টেশনে হেঁটে যাওয়ার সময় জোশুয়া ওংকে জোর করে একটি প্রাইভেট মিনিভ্যানে তুলে নেওয়া হয়েছে। তাঁকে পুলিশ সদর দপ্তরে নেওয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছে দলটি। সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
এ ছাড়া শুক্রবার ভোরে অ্যাগনেস চোকে গ্রেপ্তার করা হয় বলেও জানা গেছে। অনুমোদন ছাড়া সমাবেশে অংশ নেওয়া এবং অংশগ্রহণে উদ্বুদ্ধ করার অভিযোগে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানা গেছে। এ ছাড়া জোশুয়া ওং অন্য একটি অননুমোদিত সমাবেশ আয়োজন করছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। গত ২১ জুন টানা ১৫ ঘণ্টা পুলিশ সদর দপ্তর অবরোধ করে রেখেছিল বিক্ষোভকারীরা। জোশুয়া ওং ও অ্যাগনেস চোকে এ কারণে আটক করা হয়েছে বলেও ধারণা করা হচ্ছে।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাতে স্বাধীনতাকামী নেতা অ্যান্ডি চ্যানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ওই দিন রাতে হংকং থেকে জাপান যাওয়ার ফ্লাইট ধরার সময় তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম এইচকেএফপি জানিয়েছে, দাঙ্গায় ইন্ধন দেওয়া এবং এক পুলিশ কর্মকর্তাকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
টানা ১৩ সপ্তাহের মতো সাপ্তাহিক ছুটিতে নির্ধারিত বিক্ষোভের আগেই এসব ঘটনা ঘটল। এ ছাড়া জননিরাপত্তার দোহাই দিয়ে পুলিশ ওই বিক্ষোভ সমাবেশের জন্য অনুমতি প্রত্যাখ্যান করেছে বলে জানিয়েছে। তবে সমাবেশ ভালোভাবেই অনুষ্ঠিত হবে বলে আশা প্রকাশ করছেন বিক্ষোভকারীরা।
২০১৪ সালে হংকংয়ের ‘আমব্রেলা মুভমেন্ট’-এর সমাবেশগুলোতে নেতৃত্বের ভূমিকার জন্য জোশুয়া ওং ও অ্যাগনেস চো এবং হংকংয়ের স্বাধীনতাকামী নেতা হিসেবে পরিচিত অ্যান্ডি চ্যান বিশেষভাবে পরিচিত।
২০১৪ সালের ওই বিক্ষোভের জন্য জোশুয়া ওংকে গ্রেপ্তার করার পর গত জুনে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। তবে কয়েক সপ্তাহ না পেরোতেই আবারও তাঁকে আটক করা হলো।
হংকংয়ে বিতর্কিত প্রত্যর্পণ বিল বাতিলের দাবিতে শুরু হওয়া বিক্ষোভের পর থেকে প্রায় ৯০০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এদিকে বিলটি সাময়িক স্থগিত হওয়ার পরও তা পুরোপুরি বাতিল এবং পুলিশি বর্বরতার তদন্তের দাবিতে আরো বড় আন্দোলনে রূপ নিয়েছে।
এ ছাড়া এ বিক্ষোভের ফলে প্রায়ই পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে। এসব ঘটনায় এখন পর্যন্ত অনেকেই আহত হয়েছেন।
এদিকে চীনা সরকার সেনা পাঠিয়ে এ প্রতিবাদে হস্তক্ষেপ করতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিক্ষোভকারীরা। গত বৃহস্পতিবার চীনের সামরিক বাহিনীর একটি দলকে হংকংয়ে পাঠানোর পর এ উদ্বেগ আরো জোরালো হয়। তবে চীনা সরকার এটিকে সেনাবাহিনীর বার্ষিক আবর্তন বলে উল্লেখ করেছে।