ফ্রান্সে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত ১৫৩
ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে একযোগে কয়েক জায়গায় ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় ১৫৩ জন নিহত হয়েছে।প্যারিসের ডেপুটি মেয়র প্যাট্রিক ক্লুগম্যান জানান, বাতাক্লান কনসার্ট হলে প্রায় ১১৮ জনকে হত্যা করেছে সন্ত্রাসীরা। এ ছাড়া দেশটির জাতীয় ফুটবল স্টেডিয়ামের পাশে কয়েকটি বিস্ফোরণ হয়েছে। স্থানীয় সময় গতকাল শুক্রবার রাতে এসব হামলার ঘটনা ঘটে।
হামলার সময় কনসার্ট হলে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ব্যান্ড দল ‘ইগলস অব ডেথ’ সঙ্গীত পরিবেশন করছিল। ঘটনাস্থল থেকে শতাধিক মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এখানে দুজন সন্ত্রাসীকে হত্যা করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
ফ্রান্সের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, প্যারিস ও সেন্ট ডেনিসে গুলি ও বোমা বিস্ফোরণ ১৫৩ জন নিহত হয়েছে। ঘটনার পর দেশটিতে জরুরি অবস্থা জারি করেছে সরকার।
জাতীয় ফুটবল স্টেডিয়াম স্ট্যাড ডি ফ্রান্সের কাছে একটি পানশালায় বিস্ফোরণের সময় জার্মানি ও ফ্রান্সের মধ্যে ফুটবল ম্যাচ চলছিল। বিস্ফোরণের পর পরই খেলোয়াড়রা কিছুক্ষণের জন্য থমকে যায়। খেলা শুরু করলে আবারও বিস্ফোরণ ঘটে। একপর্যায়ে গ্যালারি থেকে দর্শকরা মাঠে নেমে আসে। ফ্রান্সের পত্রিকা জানিয়েছে, এখানে বসেই খেলা দেখছিলেন প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাদঁ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে, একে-৪৭ বন্দুক নিয়ে সন্ত্রাসীরা অতর্কিতে গুলি চালাতে শুরু করে। কনসার্ট হলে ছয় থেকে আটজন সন্ত্রাসী প্রায় ১০০ জনকে জিম্মি করে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়।
সিরিয়া ও ইরাকে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন জোটে আইএসবিরোধী হামলায় অংশগ্রহণকারী ফ্রান্স এর আগেই সতর্ক অবস্থায় ছিল। কারণ খুব শিগগিরই প্যারিসে শুরু হতে যাচ্ছে জলবায়ু সম্মেলন কপ২১।
হামলার কিছুক্ষণ পর রাতেই সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন ফ্রাঁসোয়া ওলাদঁ। তিনি বলেন, ইসলামিক গোষ্ঠী বা আল-কায়েদা গোষ্ঠী এ হামলা চালাতে পারে। হামলার ঘটনায় দেশটির সীমান্ত বন্ধের ঘোষণা দেন তিনি।
ফ্রান্সের পুলিশ জানিয়েছে, হামলায় স্বয়ংক্রিয় বন্দুক ব্যবহার করা হয়েছে। তারা প্যারিসের বাসিন্দাদের ঘরের ভেতরেই আপাতত অবস্থান করতে বলেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন এ হামলার ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। যেকোনো মুহূর্তে তাঁরা সহায়তার জন্য প্রস্তুত আছেন বলেও জানান।
প্যারিস থেকে ছাত্র ফ্যাবিয়েন ব্যারন বলেন, ‘আমি আমার বোনের কাছে যাচ্ছিলাম, পথে বেশ কিছু গুলির শব্দ শুনি। এরপর আমি দেখি, তিন ব্যক্তি রাস্তায় মরে পড়ে আছে। তাদের মরদেহ প্লাস্টিক ব্যাগে মুড়িয়ে রাখা হয়েছে।’