হাতুড়িধারীদের আক্রমণে রক্তাক্ত হংকং আন্দোলনের নেতা
ভয়াবহ শারীরিক আক্রমণের শিকার হয়েছেন হংকংয়ের বৃহত্তর গণতন্ত্রপন্থী গ্রুপের নেতা। বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিনি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একাধিক ছবিতে দেখা যায়, রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে আছেন সিভিল হিউম্যান রাইটস ফ্রন্টের (সিএইচআরএফ) নেতা জিমি শ্যাম। ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
হংকংয়ের নেতা ক্যারি ল্যাম গতকাল বুধবার পার্লামেন্টে বার্ষিক ভাষণ প্রদানকালে বিরোধীদলীয় আইনপ্রণেতারা বিভিন্ন শোরগোল ও ব্যঙ্গ-বিদ্রুপের মুখে সরাসরি ভাষণ দেওয়া বন্ধ করতে বাধ্য হন। এ ঘটনার কয়েক ঘণ্টা পর হামলার শিকার হন গণতন্ত্রপন্থী নেতা জিমি।
বৃহত্তর গণতন্ত্রের সমর্থনে গত জুনে শুরু হওয়া গণবিক্ষোভ থামার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।
হংকংয়ের মংকক এলাকায় হাতুড়িধারী চার-পাঁচ ব্যক্তি মিলে জিমির ওপর হামলা চালায় বলে সিএইচআরএফের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে। হামলায় মাথায় আঘাত পান জিমি।
সিএইচআরএফ আরো জানিয়েছে, আহত অবস্থায় জিমিকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। বর্তমানে তাঁর অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে।
বিক্ষোভ শুরুর পর এ নিয়ে দ্বিতীয় দফা হামলার শিকার হলেন জিমি।
সিএইচআরএফের দাবি, এ হামলার সঙ্গে সরকার সমর্থকরা জড়িত। সাম্প্রতিক সময়ে আরো একাধিক গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলনকারীর ওপর সরকার সমর্থকরা হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
এদিকে হামলার পর সিএইচআরএফ এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘রাজনৈতিক সন্ত্রাস কায়েমের লক্ষ্যে হুমকি দিয়ে এবং স্বাভাবিক ও বৈধ অধিকার প্রয়োগ থেকে বঞ্চিত করতেই যে এমন ঘটনা ঘটানো হয়েছে, তা বুঝতে বেগ পেতে হয় না।’
এর আগে সিএইচআরএফ এবারের গ্রীষ্মে বড় ধরনের একাধিক শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ শোভাযাত্রা আয়োজন করেছিল। গত রোববার তেমনই একটি শোভাযাত্রা আয়োজনের জন্য পুলিশের কাছে অনুমতি চেয়েছিল সিএইচআরএফ। কিন্তু পুলিশ অনুমতি দেয়নি। অবশ্য গণতন্ত্রপন্থী অনেক কট্টর বিক্ষোভকারী পুলিশের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করেই প্রতিবাদ চালিয়ে যাচ্ছে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ছে।
এদিকে, জিমি শ্যামের ওপর হামলার বিষয়ে তদন্ত করতে কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানিয়েছে মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।
অ্যামনেস্টির পূর্ব এশিয়া আঞ্চলিক কার্যালয়ের প্রধান জসুয়া রোসেনজেই বলেন, ‘জিমি শ্যামকে রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় ফেলে রাখা হয়। এর পর মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত জিমিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলার ঘটনা বেড়ে চলেছে। এর মধ্যেই এমন জঘন্য নৃশংস ঘটনা ঘটল।’