কানাডায় আশ্রয় পেল আয়লানের পরিবার
মনে আছে ভূমধ্যসাগরে ডুবে নির্মমভাবে প্রাণ হারানো শিশু আয়লানের কথা? নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে গ্রিসে যাওয়ার স্বপ্ন দেখেছিল গৃহযুদ্ধ-বিধ্বস্ত সিরিয়ার ছোট্ট শিশুটি। আরো অনেকের মতো সেও মা-বাবার হাত ধরে চেষ্টা করেছিল সমুদ্র পাড়ি দেওয়ার। কিন্তু পারেনি সে। শেষ পর্যন্ত তুরস্ক উপকূলে ভেসে আসে ছোট্ট আইলানের মৃতদেহ। মর্মান্তিক মৃত্যুর পর শরণার্থী এই শিশুটির মৃতদেহের ছবি কাঁদিয়েছিল সারা বিশ্বকে।
সেই ঘটনার প্রায় চার মাস পর আয়লানের পরিবারের অন্য সদস্যরা কানাডায় আশ্রয় পেতে চলেছেন। কানাডায় পরিবারসহ অভিবাসনের জন্য তার ভাইয়ের আবেদনপত্র কানাডা সরকার গ্রহণ করেছে বলে জানিয়েছেন আয়লানের ফুপু কানাডা নিবাসী তিমা কুর্দি। তিমা জানান, কানাডায় অভিবাসনের জন্য তার ভাই মোহাম্মদ কুর্দির আবেদনপত্র গ্রহণ করা হয়। তবে নিরাপত্তা-সংশ্লিষ্ট নিরীক্ষণ প্রক্রিয়া এখনো চলছে। মোহাম্মদের সঙ্গে তাঁর অন্য ভাই আয়লানের বাবা আবদুল্লাহ কুর্দি এবং তাঁর পরিবারও কানাডায় আসবে। তারা ক্রিসমাসের আগেই কানাডা পৌঁছাবে বলে আশা করছেন তিমা।
এদিকে ইনডিপেনডেন্ট জানিয়েছে, স্ত্রী ও দুই ছেলেকে হারিয়ে আর কানাডায় যেতে ইচ্ছুক নন আইলানের শোকগ্রস্ত বাবা আবদুল্লাহ কুর্দি। কানাডার সিটিজেনশিপ ও ইমিগ্রেশন বিভাগের মুখপাত্র রেমি লারিভিয়ের জানান, কুর্দি পরিবারের কানাডায় অভিবাসনের জন্য প্রয়োজনীয় সব কাজ বেশ দ্রুতগতিতেই সম্পন্ন হচ্ছে। সমুদ্র পাড়ি দিতে গিয়ে গোটা পরিবারের জীবনে নেমে আসে এক করুণ বেদনাদায়ক পরিণতি। স্ত্রী ও শিশু আইলানসহ আরেক ছেলেকে চোখের সামনে সমুদ্রে ডুবে মরতে দেখেন বাবা।
গত ২ সেপ্টেম্বর ছোট নৌকায় করে তুরস্ক থেকে গ্রিক দ্বীপ কোসে পরিবারসহ যাওয়ার পথে তিন বছরের সিরিয়ান শিশু আয়লান কুর্দিসহ ১০ জন নৌকা ডুবে মারা যায়। আয়লানের মৃতদেহ তুরস্কের সাগরতীরে ভেসে এলে তার ছবি তোলেন এক তুর্কি সাংবাদিক, যা সামাজিক মাধ্যমে শরণার্থী সংকট বিষয়ে ঝড় তোলে।