স্পেনে সাধারণ নির্বাচনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস
স্পেনে সাধারণ নির্বাচনে রোববার ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। দেশটির ইতিহাসে এবারের নির্বাচন অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বার্তা সংস্থা এএফপির খবরে বলা হয়েছে, স্থানীয় সময় সকাল ৯টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে এবং রাত ৮টা পর্যন্ত চলবে। ভোট শেষ হওয়ার দুই ঘণ্টা পর আংশিক সরকারি ফলাফল পাওয়া যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, গত কয়েক দশকের মধ্যে এবারই নির্বাচন দ্বিদলীয় বৃত্তে আটকে নেই। নবগঠিত ব্যয়সংকোচন বিরোধী পোডেমস পার্টি এবং উদারপন্থী সিটিজেনস, ক্ষমতাসীন রক্ষণশীল পপুলার পার্টি এবং সোশ্যালিস্ট পার্টিকে কড়া প্রতিযোগিতার মুখোমুখি দাঁড় করাতে পারে বলে নির্বাচনী পূর্বাভাসে বলা হয়েছে। নির্বাচনী পূর্বাভাসে ক্ষমতাসীনরা খুবই অল্প ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছে বলে জানানো হয়।
পোডেমস এবং সিটিজেনস পার্টি এবারই প্রথম জাতীয় পরিসরে নির্বাচনে প্রার্থিতা দিচ্ছে। এবারের নির্বাচনে এই নতুনদের দিকেই ভোটাররা বেশি আকৃষ্ট হতে পারেন। তবে কোনো পার্টিই একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনে সক্ষম হবেন না বলে ধারণা করা হচ্ছে।
২০১১ সালের ডিসেম্বরে নির্বাচনে সোশ্যালিস্ট পার্টিকে হারিয়ে ক্ষমতায় বসেন পপুলার পার্টির মারিয়ানো রাহয়। সে সময় দেশটিতে চলমান অর্থনৈতিক সংকটকে পুঁজি করে তিনি নির্বাচনে জয়লাভ করেন। গত চার বছরে কঠিন ব্যয়সংকোচন ও শ্রম ব্যবস্থা সংস্কারের মাধ্যমে স্পেন এখন কাগজে-কলমে অর্থনৈতিক মন্দা থেকে বেরিয়ে এসেছে। তবে দেশটিতে বর্তমানে বেকারত্বের হার ২১ শতাংশের বেশি।
গত বুধবার গালিসিয়া অঞ্চলে নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর সময় স্পেনের প্রধানমন্ত্রী রাহয়কে সজোরে ঘুষি মারে এক কিশোর। এতে তার চোখের চশমা ভেঙে যায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, এ ঘটনা অবশ্যই অনাকাঙ্ক্ষিত, তবে তা প্রমাণ করে, সাধারণ জনগণ পুরোনো নেতৃত্বের ওপর ভীষণভাবে বিরক্ত আর তারা বিকল্প চায়।
স্পেনের বর্তমান অর্থনীতিই ভোটারদের সবচেয়ে উদ্বেগের কারণ। ব্যয়সংকোচন ও দুর্নীতির কারণে অনেক ভোটারই ক্ষিপ্ত হয়ে আছেন। দেশটির প্রধানমন্ত্রী মারিয়ানো রাহয় প্রশাসন এবং পূর্ববর্তী ক্ষমতাসীন সোশ্যালিস্ট পার্টি, উভয়কেই এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী করা হয়।
বাস্তবিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় মনে করা হচ্ছে, স্পেনের নতুন দলগুলো এ নির্বাচনে ভালো চমক দেখাতে পারে। আর এটি হলে ১৯৭০ সালের পর স্পেনের রাজনীতিতে একটি আমূল পরিবর্তনের সম্ভাবনা দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। স্পেনের ক্যাটালোনিয়া অঞ্চলে স্বাধীনতার দাবি এ নির্বাচনে একটি বিশেষ ভূমিকা পালন করবে বলে মনে করেন তাঁরা। ওই অঞ্চলের স্বাধীনতা নিয়ে গণভোট প্রস্তাবের তীব্র বিরোধী ছিলেন রাহয়।