লন্ডনের রাস্তায় রিকশা, মিনিটে ভাড়া ১১৬০ টাকা!
যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনের রাস্তায়ও চলে রিকশা। ঠিক বাংলাদেশের রিকশার মতো না হলেও এটি পেডেল দিয়ে চালাতে হয়, অর্থাৎ পায়ে ঠেলতে হয়। লন্ডনের অক্সফোর্ড স্ট্রিটে এসব রিকশা স্থানীয়ভাবে পেডিক্যাব নামেও পরিচিত।
আর এই পেডিক্যাবের ভাড়া নিয়ে নিয়মিত ঝামেলায় পড়তে হয় পর্যটকদের। ভাড়ার কথা শুনলে আপনার ‘চক্ষু চড়ক গাছ’ না হয়ে উপায় থাকবে না। অনুমান করেও ঠিক হিসাবে মেলাতে পারবেন না, ভাড়া এমনই চড়া।
গত শুক্রবার রিকশাচালক ও পর্যটকের মধ্যে কথোপকথনের একটি ভিডিওচিত্র ইউটিউবে ছড়িয়ে পড়ে। আর এর পরই বিভিন্ন মহল থেকে বিরূপ প্রতিক্রিয়া আসতে থাকে। লন্ডনের ওয়েস্টমিনস্টার কাউন্সিল জানিয়েছে, ভিডিওচিত্রটি অত্যন্ত পীড়াদায়ক। লন্ডনের মেয়র কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, পেডিক্যাব নিয়ে তারা খুবই উদ্বিগ্ন।
অক্সফোর্ড স্ট্রিটের সেলফ্রিজেস এলাকার পাশে কথোপকথনের ভিডিওচিত্রটি ধারণ করেন একজন পথচারী।
গোঁফ-দাড়িওয়ালা পেডিক্যাব চালক একজন পর্যটকের জন্য মিনিটপ্রতি ১০ পাউন্ড (১১৬০ টাকা) দাবি করেন। এর জবাবে লেদারল্যান্ডস থেকে বেড়াতে আসা ওই পর্যটক বলেন, ‘আপনি কীভাবে আধা ঘণ্টা ভ্রমণের জন্য ৬০০ পাউন্ড (৬৯৬০০ টাকা) দাবি করেন?’
এর জবাবে চালক বলেন, ‘আমার সঙ্গে চুক্তি করেই তো ভ্রমণ করেছেন। এখন এই প্রশ্ন করছেন কেন? আমি কি ঠিক বলছি? আমি কি ঠিক বলছি?’ সঙ্গীসহ পেডিক্যাবে ভ্রমণ করা ওই পর্যটক বলেন, ‘৩০ মিনিট ভ্রমণের জন্য আপনি ৬০০ পাউন্ড চাচ্ছেন।’ একপর্যায়ে পথচারীকে ভিডিও ধারণ করতে নিষেধ করেন চালক। তবে ইউটিউবে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায় তা বন্ধ হয়নি।
ভিডিওতে দেখা যায়, রাগে গজগজ করতে থাকা ওই পর্যটক বলে ওঠেন, তিনি পুলিশের কাছে যাবেন এবং ভাড়ার ব্যাপারটি বলে দেবেন। এর জবাবে চালক বলেন, তাঁরা এ নিয়ে আগেই চুক্তি করেছিলেন।
চালক পেডিক্যাবের ভাড়ার তালিকা দেখান পর্যটককে। পর্যটক বলেন, ‘এটা বেআইনি।’
লন্ডনের মেয়রের একজন মুখপাত্র মেইল অনলাইনকে বলেন, ‘পেডিক্যাব ব্যবসার বিষয়টি মেয়র খুব গুরুত্বের সঙ্গে দেখছেন এবং লন্ডনের পরিবহন কর্তৃপক্ষ যাতে তাদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, সে জন্য সরকারের কাছে তদবির করছেন। লন্ডনের মেয়রের কাছে এ মুহূর্তে তাদের নিয়্ন্ত্রণ করার আইনি ক্ষমতা নেই।’
এরডি টোপালকা নামের এক চালক ইভনিং স্ট্যান্ডার্ড পত্রিকাকে বলেন, ‘আধা ঘণ্টার জন্য সে তাদের কাছ থেকে ৬০০ পাউন্ড চাচ্ছে? কি হচ্ছে এটা?’ তিনি বলেন, ‘আমি বুঝতে পারছি না তারা এটা কী করছে। এটা খুব জঘন্য একটা কাজ। আমি মিনিটে এক পাউন্ড ভাড়া নিই। ৬০০ পাউন্ড দিয়ে তো আমি হেলিকপ্টার ভাড়া করতে পারি।’