ডাহা মিথ্যা সত্য হলো যেভাবে
প্রবাদ আছে, ‘একটি ছবি হাজার শব্দের সমান শক্তিশালী।’ সত্য দৃশ্য দিয়ে যখন ডাহা মিথ্যা কাহিনী সাজানো হয়, তখন বোঝা যায়, বাক্যটি কতটা শক্তিশালী।
২০১৫ সালে কিছু স্থির ছবি ও ভিডিওচিত্র ইন্টারনেটে প্রচার করে মিথ্যা তথ্যকে সত্য হিসেবে বা কোনো একটি ঘটনার বলে চালানো হয়েছে। সেসব মিথ্যাচারের কিছু চিত্র তুলে ধরেছে বিবিসি।
নেপালে ভূমিকম্পের ভুয়া ছবি : চলতি বছরের এপ্রিলে নেপালে ভয়াবহ ভূমিকম্প হয়। এতে দেশটির নয় হাজারের বেশি মানুষ নিহত হন। আহত হন ২৩ হাজারের বেশি মানুষ। ওই ভূমিকম্পে বাস্তুচ্যুত হন কয়েক লাখ মানুষ। সে লোকজনের মধ্যকার দুজনকে বোঝাতে চার বছরের এক ছেলেশিশু ও তাঁর দুই বছর বয়সী বোনের ছবি ইন্টারনেটে ছাড়া হয়। ছবিটি গোটা বিশ্বেই আলোড়ন সৃষ্টি করে।
বাস্তবে ছবিটি ছিল ভিয়েতনামের প্রত্যন্ত গ্রামের। তোলা হয়েছিল ২০০৭ সালে।
নেপালে ভূমিকম্পের ভুয়া ভিডিও : ২০১০ সালে মেক্সিকোতে ভূমিকম্পের সময় ধারণা করা হতে পারে—এমন একটি ভিডিওচিত্রকে নেপালের কাঠমান্ডুর ভূমিকম্পের ভিডিও হিসেবে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়। বেশ কিছু আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও সে ভিডিও প্রচারিত হয়। পরবর্তী সময়ে সেটি ভুয়া হিসেবে প্রমাণিত হয়।
শরণার্থীকে সাজানো হলো আইএস সদস্য : চলতি বছরজুড়ে ইউরোপে শরণার্থী সংকট ছিল প্রকট। এ নিয়ে গণমাধ্যমগুলোও একের পর এক সংবাদ প্রকাশ করেছে। শরণার্থীদের বেশে জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) সদস্যরা ইউরোপে প্রবেশ করছে বলেও খবর রটে।
লাইথ আল-সালেহ নামের ব্যক্তিকে আইএস সদস্য হিসেবে প্রচার করা হয়। আদতে তিনি ছিলেন সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদবিরোধী মধ্যপন্থী বিদ্রোহী গোষ্ঠী ‘ফ্রি সিরিয়ান আর্মি’র একজন কমান্ডার। ২০১৫ সালের আগস্টে তিনি সিরিয়া থেকে পালিয়ে মেসিডোনিয়ায় যান।
প্যারিসে বাতাক্লঁ কনসার্ট হলের মিথ্যা ছবি : যুক্তরাষ্ট্রের জনপ্রিয় রক ব্যান্ড দল ‘ঈগলস অব ডেথ মেটাল’-এর কনসার্টের একটি ছবিকে ফ্রান্সের প্যারিসে বাতাক্লঁ হলের ছবি হিসেবে প্রচার করা হয়। মূলত ছবিটি ছিল আয়ারল্যান্ডের ডাবলিনের একটি কনসার্টের।
ফ্রান্সে ১৩ নভেম্বরের সন্ত্রাসী হামলায় নিহত হন ১৩০ জন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশিসংখ্যক মানুষ নিহত হন বাতাক্লঁ হলে। সে জন্য মেটালের ওই ছবি নিয়ে আতঙ্ক তৈরি হয়।
বিবাহবিচ্ছেদ-পরবর্তী প্রতিশোধের সাজানো ছবি : জার্মানির এক ব্যক্তি বিবাহবিচ্ছেদের পর তাঁর সব সম্পত্তি দুই ভাগ করে বলে খবর রটে। বাড়ির খাট, গাড়ি, মোবাইল—সবই নাকি তিনি দুই টুকরো করে কেটেছিলেন। এ ছবিগুলো দিয়ে বানানো একটি ভিডিও ৪৫ লাখের বেশি বার দেখা হয়।
পরবর্তী সময়ে ছবিগুলো ভুয়া বলে প্রমাণিত হয়। জার্মান বার অ্যাসোসিয়েশন স্বীকার করে, প্রচারের অংশ হিসেবে তারা ভুয়া ছবিগুলো প্রকাশ করেছিল।