সিরিয়ায় পৌঁছেছে জাতিসংঘের ত্রাণবহর
যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়ার অসহায় জনগণের সাহায্যে দেশটিতে পৌঁছেছে জাতিসংঘের ত্রাণবাহী একটি বহর। সোমবার রাতে বিবিসি জানিয়েছে, সিরিয়ার সরকারি বাহিনীর অবরোধের মধ্যে থাকা বিদ্রোহী অধিকৃত শহর মাদায়ায় জাতিসংঘের ত্রাণবাহী দল পৌঁছেছে।
এর আগে শহরটির বাসিন্দারা অনাহারে মারা যাচ্ছেন বলে খবর জানিয়েছিল বিবিসি। ত্রাণবহরটি গত রোববারই মাদায়ায় পৌঁছানোর কথা ছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তের জটিলতায় এটির যাত্রা বিঘ্নিত হয়।
জাতিসংঘ ত্রাণ দলের এক কর্মকর্তা অ্যালেক জেমি জানিয়েছেন, মাদায়া ছাড়াও দেশটির উত্তরের সরকারি বাহিনী অধিকৃত আরো দুটি গ্রাম, কেফ্রায়া ও ফোয়াহতে ত্রাণবহর পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।
আলজাজিরার খবরে বলা হয়, সিরিয়ার সরকারি বাহিনী মাদায়াতে অবরোধ আরোপ করলে সেখানকার প্রায় ৪২ হাজার মানুষের খাদ্য এবং পানির সংকট দেখা দেয়। আন্তর্জাতিক সংগঠন ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস-এর তথ্যমতে, এ পর্যন্ত অন্তত ২৩ জন মানুষ ক্ষুধার কারণে মারা গেছেন। তীব্র খাদ্যাভাবে মাদায়া অঞ্চলের লোকেরা এখন ঘাস ও পোকামাকড় খেতে শুরু করেছেন বলে জানা গেছে।
সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে অবরোধ একটি নিয়মিত ঘটনা হলেও মাদায়ার মারাত্মক মানবিক পরিস্থিতি বিশ্ববাসীর মনোযোগ আকর্ষণ করেছে। সরকারি বাহিনীর কঠোর অবরোধের কারণে রসদ ফুরিয়ে যাওয়ায় শহরটির বাসিন্দারা কুকুর-বিড়ালের মতো গৃহপালিত প্রাণী ও ঘাস খেয়ে জীবন বাঁচানোর চেষ্টা করছেন বলে জানা গেছে।
লন্ডনভিত্তিক আরব রাজনৈতিক বিশ্লেষক শরিফ নাসাসিবি বলেন, ‘এ ধরনের অবরোধ যুদ্ধাপরাধের শামিল। শত্রুরা অবস্থান করাতে ইচ্ছাকৃতভাবে সরকারি বাহিনী সেই অঞ্চলের সামগ্রিক জনগণকে সাজা দিচ্ছে।’ তাঁর মতে, এমন অবস্থা চলতে থাকলে সে অঞ্চলের সামগ্রিক জনগণই বিদ্রোহী হয়ে ওঠার আশঙ্কা থাকে।
এ ছাড়া সিরিয়ায় ১৫টি অবরুদ্ধ এলাকায় তীব্র খাদ্যাভাব দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। এসব এলাকায় অন্তত চার লাখের মতো মানুষ ক্ষুধার কারণে অসহায় জীবনযাপন করছে।
জাতিসংঘের রিপোর্ট অনুযায়ী, চলমান এই যুদ্ধ ২০১১ সালের দিকে শুরু হওয়ার পর এ পর্যন্ত আড়াই লক্ষাধিক বেসামরিক সিরীয় জনগণ নিহত হয়েছে এবং ৪৩ লক্ষাধিক মানুষ শরণার্থী হয়েছে।