প্রামাণ্যচিত্র বন্ধ ভারতের আন্তর্জাতিক আত্মহত্যা : পরিচালক
নয়াদিল্লিতে মেডিকেল ছাত্রীকে ধর্ষণ ও হত্যার ওপর নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র ‘ইন্ডিয়াস ডটার’ নিষিদ্ধ করার মধ্য দিয়ে ভারত আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আত্মহত্যা করেছে। গত শুক্রবার রাতে লন্ডনে প্রামাণ্যচিত্রটির প্রদর্শনী শেষে পরিচালক লেসলি উডউইন এ মন্তব্য করেন।
ভারতের সংবাদমাধ্যম আইবিএন লাইভ-এর খবরে বলা হয়, গত সপ্তাহে প্রামাণ্যচিত্রটির প্রচার নিষিদ্ধ করে ভারত। একই সঙ্গে ইউটিউব থেকে ভিডিওটির সব লিংক সরানোরও নির্দেশ দেওয়া হয়। ভারতের পুলিশের দাবি, প্রামাণ্যচিত্রে ওই ধর্ষণে দোষী সাব্যস্ত একজনের বক্তব্য আছে, যা ‘ভীতি ও উত্তেজনাকর’ পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে। এটি প্রকাশ হলে জনরোষ বাড়তে পারে, তাই এর প্রচার নিষিদ্ধ করা হয়েছে বলে জানায় কর্তৃপক্ষ।
এ বিষয়ে একটি প্যানেল বক্তব্যে লেসলি উডউইন বলেন, ‘আমার মূল উদ্দেশ্য ছিল ভারতের প্রতি কৃতজ্ঞতা উপহার দেওয়া, সত্যিকার অর্থে ভারতের প্রশংসা করা, ভারতকে একমাত্র দেশ হিসেবে উপস্থাপন করা, যেখানে এই ধর্ষণের বিরুদ্ধে দেশটির অবস্থান দৃষ্টান্তমূলক হয়ে ওঠে, একটি দেশ হিসেবে যে কেউ শুরু হওয়া এই পরিবর্তন দেখতে পারে। কিন্তু চূড়ান্ত স্ববিরোধিতা হলো তাঁরা এখন আমার দিকে আঙুল তুলে বলছে, আমি ভারতকে অবমাননা করতে চেয়েছি। প্রামাণ্যচিত্রটি নিষিদ্ধ করার মাধ্যমে তারাই আন্তর্জাতিক আত্মহত্যা করেছে।’
ব্রিটিশ চলচ্চিত্র নির্মাতা বলেন, মেডিকেল কলেজছাত্রী নির্ভয়াকে ধর্ষণের পর রাস্তায় প্রতিবাদ দেখে অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন তিনি। এ থেকেই চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করেছিলেন তিনি। ২০১২ সালের ডিসেম্বরে চলন্ত বাসে ধর্ষণের শিকার হন ফিজিওথেরাপির শিক্ষার্থী নির্ভয়া। ধর্ষণের পর নির্ভয়াসহ তাঁর বন্ধুকে বাস থেকে ফেলে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় ভারতসহ বিশ্বজুড়ে তোলপাড় হয়।
এ ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত চারজনকে মৃত্যুদণ্ড দেন আদালত। তাদের একজন বাসচালক মুকেশ সিংয়ের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছিল ‘ইন্ডিয়াস ডটার’ নামে প্রামাণ্যচিত্রে। এতে ধর্ষণে বাধা দেওয়া ও অপরাধের জন্য ওই মেডিকেল ছাত্রীকেই দায়ী করে মুকেশ সিং। এ নিয়ে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে সমালোচনার ঝড় ওঠে। এর জের ধরেই প্রামাণ্যচিত্রটির প্রচার বন্ধ করে ভারত সরকার।