মালয়েশিয়ায় অবৈধ বাংলাদেশিরা বৈধতা পাচ্ছে
মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক বলেছেন, দেশটিতে অবস্থানরত অবৈধ শ্রমিকদের বৈধতা দেওয়া হবে। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার পার্লামেন্টে এ ঘোষণা দেন তিনি।
কত দিনের মধ্যে শ্রমিকরা বৈধ হতে পারবেন, সে বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি।
তবে মালয়েশিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন সাতুকে নাজিব রাজাক বলেন, বৈধতার বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হবে।
মালয়েশীয় প্রধানমন্ত্রীর এ ঘোষণার কথা এখন দেশটিতে থাকা প্রবাসীদের মুখে মুখে। এ ঘোষণার পর সেখানকার বাংলাদেশিরা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন।
কুয়ালালামপুর, জোহর বাহরু, মালাক্কা, পাহাং, পেনাংসহ সব প্রদেশে অবস্থানরত অবৈধ বাংলাদেশিরা এ খবরে অনেকটা স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছেন। তবে কার মাধ্যমে, কত টাকার বিনিময়ে, কীভাবে বৈধ হওয়া যাবে—এমন নানা প্রশ্নের উত্তর এখনো অজানাই থেকে গেছে।
বিগত বছরের মতো সুযোগ পেয়েও কেউ যাতে বৈধ হওয়ার প্রক্রিয়া থেকে বাদ না যায়, সে বিষয়ে সবাইকে সচেতন থাকার পরামর্শ দিয়েছেন মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. শহীদুল ইসলাম। তিনি এনটিভি অনলাইনকে বলেন, এর আগে মালয়েশিয়া সরকার অবৈধদের বৈধ হওয়ার সুযোগ দিয়েছিল। তখন বহু শ্রমিকের পাসপোর্ট, টাকা নিয়ে দালালরা সটকে পড়ে। এবার যাতে তারা দালালের সঙ্গে যোগাযোগ না করে সরাসরি হাইকমিশনে যোগাযোগ করে, সে অনুরোধ করেছেন তিনি।
শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘এবার বৈধ করার প্রক্রিয়ায় যেসব কোম্পানিকে দায়িত্ব দেওয়া হবে, তাদের সঙ্গে আমি এরই মধ্যে একাধিক বৈঠক করেছি। কারণ, বিগত সময়ে মালয়েশিয়া সরকারের সাধারণ ক্ষমার ঘোষণায় দুই লাখ ৬৪ হাজার অবৈধ শ্রমিক বৈধ হলেও বাকি অনেকেই পাসপোর্ট ও টাকা ঠিক জায়গায় দিতে না পারায় বৈধ হতে পারেনি। অনেকেই প্রতারিত হয়েছেন। এবার দালালরা সেই সুবিধা যাতে না নিতে পারে, সে জন্য বাংলাদেশি কমিউনিটিকে কীভাবে কাজে লাগানো যায়, সেটি এখন চিন্তাভাবনা করছি। তবে সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, সবাইকে অনুরোধ জানাব, কেউই যাতে দালালের শরণাপন্ন না হোন।’
বিগত বছরগুলোতে অবৈধ বাংলাদেশি অভিবাসীদের বৈধকরণ প্রক্রিয়ার নামে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে ওঠা নামমাত্র এজেন্টের বিরুদ্ধে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। পরিসংখ্যান বলছে, ৬০ শতাংশ বাংলাদেশি তখন ভুয়া এজেন্টদের খপ্পরে পড়ে বৈধ হতে পারেনি। চলতি বছরও যাতে এমন সমস্যার সৃষ্টি হতে না পারে, সে বিষয়ে কুয়ালালামপুর দূতাবাস তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রাখছে।
মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি কমিউনিটির একাধিক নেতা জানান, হাইকমিশনার শহীদুল ইসলাম আট মাস আগে এখানে যোগ দেন। এর পর থেকেই তিনি মালয়েশিয়া সরকারের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্ক গড়ে তোলেন। অবৈধ শ্রমিকদের কীভাবে বৈধ করা যায়, সে প্রক্রিয়া চার মাস আগে থেকেই তিনি শুরু করেছেন। সে লক্ষ্যে দেশটির জাহিদ হামিদির সঙ্গে ঘরোয়া বৈঠক করে বাংলাদেশি অবৈধ শ্রমিকদের বৈধ করে নেওয়ার প্রস্তাব দেন। এরপরই এ প্রস্তাব গ্রহণ করে পরবর্তী কার্যক্রম শুরুর কথা জানান।
মালয়েশিয়ায় তিন থেকে সাড়ে তিন লাখ অবৈধ শ্রমিক রয়েছে।