নোবেল শান্তি পুরস্কারের মনোনয়ন পেয়েছেন স্নোডেন
বিশ্বের দেশে দেশে দুর্নীতিগ্রস্ত রাষ্ট্রযন্ত্রের ‘আতঙ্কের’ সমার্থক হয়ে দাঁড়িয়েছিল তাঁর প্রতিষ্ঠিত ওয়েবসাইট ‘উইকিলিকস’। প্রথমে যুক্তরাষ্ট্র দিয়ে শুরু। এর পর নিয়মিত বিরতিতেই বিভিন্ন রাষ্ট্রের গোপন নথি ফাঁস করে চলেছেন এডওয়ার্ড স্নোডেন।
আর স্নোডেনের এই কর্মকাণ্ডে সাড়াও মিলেছে বেশ। নিজের এই কর্মকাণ্ডকে ‘শান্তির জন্য যুদ্ধ’ হিসেবেও অভিহিত করেছেন বেশ কয়েকবার। রাষ্ট্রযন্ত্রের ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যক্তিরাই তাঁকে এই নথি পাঠাচ্ছেন বলে তাঁর দাবি।
বিশ্বব্যাপী সাড়ার পাশাপাশি বিড়ম্বনাও কম জোটেনি তাঁর। নিজ দেশ থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন বহুদিন থেকেই। যুক্তরাষ্ট্রের মোস্ট ওয়ানটেড ব্যক্তির তালিকায় রয়েছে বর্তমানে রাশিয়ায় আশ্রয় গ্রহণকারী স্নোডেনের নাম। শুধু যুক্তরাষ্ট্রই নয়, বিশ্বের তাবৎ শক্তিধর দেশ পেতে চাইছে তাঁকে। কারণ, স্নোডেন মানেই যে ‘তথ্যভাণ্ডার’।
এত বিড়ম্বনার পাশাপাশি আরেক তালিকায় নাম থাকা নিয়ে বোধ হয় একটু খুশি হতেই পারেন স্নোডেন। কারণ, তাঁর নাম এবার রয়েছে ২০১৬ সালের শান্তিতে নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনীতদের তালিকায়।
গতকাল সোমবার ছিল ২০১৬ সালের শান্তিতে নোবেল পুরস্কারের জন্য নাম মনোনীত করার শেষ দিন। সেখানেই উঠে এসেছে তাঁর নাম। এ বিষয়ে নরওয়ের পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের প্রধান ক্রিস্টিয়ান বার্গ হার্পভিকেন বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, ‘২০১৬ সাল হতে পারে এডওয়ার্ড স্নোডেনের বছর। কারণ, তাঁর ফাঁস করা তথ্যের ইতিবাচক প্রভাব এখনই বিশ্বব্যাপী পড়তে শুরু করেছে।’
হার্পভিকেন বলেন, আগে দেশে দেশে গোয়েন্দা নীতি ছিল অত্যন্ত কঠোর এবং গোপন একটি বিষয়। কিন্তু ২০১৩ সালে স্নোডেন তথ্য ফাঁস শুরু করার পর অনেক দেশই এখন তাদের গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের নীতি পাল্টাচ্ছে, যাতে মানবাধিকার রক্ষা সহজ হচ্ছে।
স্নোডেন ছাড়াও কলম্বিয়া সরকার ও ফার্ক বিদ্রেোহীদের মধ্যে শান্তি আলোচনার জন্য নরওয়ের পাঁচ মধ্যস্থতাকারী, কলম্বিয়ার শান্তি আলোচনার মধ্যস্থতাকারী, ইরানের পারমাণবিক চুক্তির পেছনে ভূমিকা রাখা মধ্যস্থতাকারীরাও আছেন শান্তি পুরস্কারের মনোনীতদের তালিকায়।
গত বছর শান্তিতে নোবেল পুরস্কারের জন্য ২৭৩ জন প্রাথমিক মনোনীতদের তালিকায় ছিলেন। সেবার পুরস্কারটি পেয়েছিল তিউনিসিয়ান ন্যাশনাল ডায়ালগ কোয়ার্টেট নামক সংগঠন।