ভালোবাসা দিবসে প্রেমিকার কিডনি উপহার
এবারের ভালোবাসা দিবসে নতুন নজিরই রাখতে চলেছেন মিশেল লেব্রাঞ্চে। বিশ্বজুড়ে প্রেমিক-প্রেমিকারা যখন প্রিয়জনের জন্য পছন্দের উপহারটি কিনতে ব্যস্ত। ঠিক সেই সময় ভালোবাসার দিনে প্রেমিককে নিজের কিডনি উপহার দেওয়ার পরিকল্পনা করছেন যুক্তরাজ্যের ম্যানচেস্টারের এই নারী।
নিজের টুইটারে মিশেল লেখেন, ‘ভালোবাসার দিনে যখন সবাই হয়তো আনন্দে ব্যস্ত তখন হাসপাতালের কেবিনে জ্যাক সিমার্ডের আঙুল ছুঁয়ে শুয়ে থাকব আমি। আর ততক্ষণে আমার শরীরের একটা অংশ ঠাঁই করে নেবে জ্যাকের শরীরে। এটাই জ্যাককে আমার ভালোবাসার দিনের উপহার।’
যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম ডেইলি স্টারকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মিশেল জানান, জ্যাকের সঙ্গে তাঁর ভালোবাসার গল্প শুরু হয়েছিল গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে‚ ম্যানচেস্টারেরই এক গলফের মাঠে। প্রথম দেখাতেই ভালোলাগা‚ যা দিনে দিনে বদলে যায় ভালোবাসায়। ভালোবাসার কয়েকদিন পর মিশেল জানতে পারেন বহুদিন ধরেই কিডনির অসুখে ভুগছেন জ্যাক। আর নিজের কিডনি প্রতিস্থাপনের জন্য দাতা খুঁজছেন তিনি।
মিশেল বলে চলেন, ‘জন্মগতভাবেই ওর কিডনির অসুখ। সপ্তাহে তিনবার করে ডায়ালাইসিস করাতে হয় তাঁকে। এর আগেও জ্যাকের একটি কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়েছিল। আর সেই কিডনিটিকেই সম্বল করে এতদিন বেঁচে ছিল সে। এখন সেই একটি কিডনিও সমস্যা শুরু করেছে।’
যখন মিশেল জানলেন জ্যাককে বাঁচাতে কিডনি প্রতিস্থাপনের বিকল্প নেই, তখন জ্যাকের অজান্তেই প্রয়োজনীয় পরীক্ষা করিয়ে আসেন তিনি। এবং আশ্চর্যজনকভাবে মিশেলের কিডনি জ্যাকের শরীরে প্রতিস্থাপন করার যোগ্য বলে প্রমাণিত হয়। এরপর তিনি জ্যাককে খুলে বলেন সব কথা।
জ্যাক প্রথমে রাজি না হলেও মিশেলের আগ্রহ দেখে রাজি হন। গত ডিসেম্বরে দুজনেরই বিস্তারিত পরীক্ষা সম্পন্ন করেন চিকিৎসক। এরপর মিশেল জানান, ভালোবাসার দিনে এই অপারেশনটি করাতে চান তিনি। আর তাঁর এই ইচ্ছেমতো চিকিৎসকও ১৪ ফেব্রুয়ারি অস্ত্রোপচারের দিন ঠিক করেন।
মিশেল বলেছেন, অস্ত্রোপচার সফল হলে সারা জীবনের জন্যই জ্যাকের শরীরের অবিচ্ছেদ্য অংশে পরিণত হবেন তিনি। আর এভাবেই তিনি থেকে যেতে চান প্রিয়তমের জীবনে। আর এটাকে জ্যাকের জন্য তাঁর ভালোবাসার উপহার হিসেবেও উল্লেখ করেছেন মিশেল।