বাংলাদেশে মত প্রকাশের স্বাধীনতা বাধাগ্রস্ত
বাংলাদেশে স্বাধীন গণমাধ্যমগুলো মারাত্মক চাপে আছে। মত প্রকাশের স্বাধীনতা হচ্ছে বাধাগ্রস্ত।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের বার্ষিক মানবাধিকার প্রতিবেদনে (২০১৫/১৬) এমন দাবি করা হয়েছে।
ওই প্রতিবেদনের ভূমিকায় বলা হয়, গত বছর সরকারবিরোধী বিক্ষোভের সময় পেট্রলবোমার আঘাতে বহু লোক নিহত হন। যাত্রীবাহী বাসসহ অন্যান্য পরিবহনে হামলা হয়। বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক বিবেচনায় শত শত বিরোধী নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে। স্বাধীন গণমাধ্যম মারাত্মক চাপে ছিল এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতা ছিল বাধাগ্রস্ত। কমপক্ষে নয়জন সেক্যুলার ব্লগার ও প্রকাশক হামলার শিকার হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে পাঁচজনের আঘাতজনিত মৃত্যু হয়েছে। ৪০ জনের বেশি মানুষ গুম হয়েছে।
প্রতিবেদনের মত প্রকাশের স্বাধীনতা অংশে বলা হয়েছে, সরকারের সমালোচনা করা স্বাধীন গণমাধ্যমগুলো চাপে আছে। গত বছরের অক্টোবরে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে দেশের দুটি প্রভাবশালী সংবাদপত্র প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারে বিজ্ঞাপন না দিতে বলা হয়। বিজ্ঞাপন দিলে শাস্তির কথা বলা হয়।
সংসদের সমালোচনা করায় নভেম্বরে বাংলাদেশে দুর্নীতিবিরোধী বেসরকারি সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের (টিআইবি) কার্যক্রম বন্ধের সুপারিশ করে সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।
বিচার নিয়ে সমালোচনা করায় ঢাকার একটি আদালত সুশীল সমাজের ৪৯ সদস্যের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ আনেন।
নভেম্বরে সরকার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও অন্যান্য যোগাযোগ অ্যাপস বন্ধ করে দেয়। এর মধ্য দিয়ে মত প্রকাশের স্বাধীনতা বাধাগ্রস্ত হয়।
সেক্যুলার মত প্রকাশের জন্য ব্লগাররা ইসলামপন্থী সংগঠনগুলোর হামলার শিকার হয়েছে বলে ধারণা করা হয়েছে। ফেব্রুয়ারিতে চাপাতির কোপে অভিজিৎ রায় নিহত হন। তাঁর স্ত্রী রাফিদা আহমেদ বন্যা বেঁচে যান। আগস্টে অন্য তিন ব্লগার ওয়াশিকুর রহমান, নিলয় নীল ও অনন্ত বিজয় দাশকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
অক্টোবরে সেক্যুলার বই প্রকাশের জন্য একজন প্রকাশককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। ওই হামলা থেকে বেঁচে যান অপর একজন প্রকাশক ও দুজন সেক্যুলার লেখক। প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারের কর্তাব্যক্তিরা ব্লগার ও প্রকাশকদের লেখায় ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগ করেন।