‘নজিরবিহীন হুমকির মুখে ইউরোপ'
ইউরোপীয় পুলিশ সংস্থা ‘ইউরোপোল’ সতর্ক করে বলেছে, সিরিয়া থেকে ফেরত আসা ইসলামিক স্টেট (আইএস) জঙ্গিদের কাছ থেকে নজিরবিহীন হুমকির মুখে রয়েছে ইউরোপের দেশগুলো। একইসাথে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই ইউরোপকে সতর্ক করে বলেছে, ব্রাসেলসের ধাঁচে ইউরোপজুড়ে হামলা চালাতে পারে আইএস।
ব্রাসেলসে আজ বৃহস্পতিবার ইউরোপোলের এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির পরিচালক রব ওয়েনরাইট বলেছেন ইউরোপে প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ জঙ্গি আদর্শে দীক্ষা নিয়েছে এবং পশ্চিমা দেশগুলোর ওপর তারা যেকোনো সময়ে হামলা চালাতে পারে। এদিকে ব্রাসেলসে মঙ্গলবারের বোমা হামলার ঘটনায় বেলজিয়ামের পুলিশ এখন মনে করছে হামলায় জড়িত দুই ব্যক্তি সম্ভবত পলাতক রয়েছে। ইউরোপে জিহাদি হামলার হুমকি মোকাবিলায় ব্রাসেলসে আজ জরুরি বৈঠকও হয়েছে।
ব্রাসেলসের বোমা হামলার পর ইউরোপের নিরাপত্তা নিয়ে যখন সরকারগুলো অনেক প্রশ্নের মুখোমুখি, তার মধ্যেই আজ ইউরোপীয় পুলিশ সংস্থার প্রধান এই হুঁশিয়ারি দিলেন। ইউরোপোলের প্রধান রব ওয়েনরাইট বলেন, ‘অন্তত পাঁচ হাজার ইউরোপীয় নাগরিক ইরাক এবং সিরিয়া ঘুরে এসেছে। এরা জঙ্গিবাদে দীক্ষা নিয়েছে, সেখানে নানা ধরনের সন্ত্রাসী কাজের প্রশিক্ষণ নিয়েছে। এখন এরা ইউরোপের জন্য বিরাট হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
রব ওয়েনরাইট বলেন, ‘আমরা প্রথমে যা আশংকা করেছিলাম, এটা কিন্তু তার চেয়েও অনেক বেশি বিস্তৃত। ইউরোপোল এই জিহাদি নেটওয়ার্ক খুঁজে বের করতে বেলজিয়াম এবং ফ্রান্সের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে একযোগে কাজ করছে। জঙ্গিবাদে দীক্ষা নিয়ে সিরিয়া এবং ইরাকে গেছে এমন ইউরোপীয় নাগরিকের সংখ্যা কিন্তু অনেক। এদের অনেকে ইউরোপে ফিরে এসেছে। তারা এখন ইউরোপের জন্য সন্ত্রাসবাদের এক বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
ইউরোপীয় ইউনিয়নের একেবারে প্রাণকেন্দ্র ব্রাসেলসে যেভাবে ইসলামিক স্টেটের জঙ্গিরা ব্যাপক বোমা হামলা চালিয়েছে, তা ইউরোপের নিরাপত্তাকে এখন এক বিরাট প্রশ্নের মুখে ফেলে দিয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং বিচারমন্ত্রীরা আজ বৃহস্পতিবার ব্রাসেলসে জরুরি বৈঠকে বসছেন। অন্যদিকে ব্রাসেলস বোমা হামলার ঘটনায় সন্দেহভাজনদের ধরতে পুলিশী অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
বেলজিয়াম থেকে পাওয়া খবরে বলা হচ্ছে, পুলিশ এখন আসলে দুজন সন্দেহভাজনকে খুঁজছে, যারা এই ঘটনায় অংশ নেওয়ার পর পালিয়ে গেছে। এদের একজন বিমানবন্দরের হামলায় অন্য দুই আত্মঘাতী হামলাকারীর সঙ্গে ছিল। অসমর্থিত সূত্রের খবরে বলা হচ্ছে, অপরজন মেট্রো স্টেশনের বোমা হামলায় সাহায্য করেছিল।
এদিকে বেলজিয়ামের স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, বোমা হামলায় নিহতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে আশংকা আছে, কারণ হামলায় আহত অন্তত ৬০ জনের অবস্থা খুবই গুরুতর।