বিমান ছিনতাইকারীর সঙ্গে ছবি
বর্তমান সময়ে সবচেয়ে সাধারণ অথচ গুরুত্বপূর্ণ কাজ সম্ভবত ছবি তোলা। ডিজিটাল এই পৃথিবীতে প্রায় সবার হাতেই আছে স্মার্ট ফোন। আর তাই যেকোনো মুহূর্তকে ধরে রাখতে চট করে তুলে নেওয়া হচ্ছে ছবি। বিষয়টা এমন পর্যায়ে গেছে যে খোদ বিমান ছিনতাইকারীর সঙ্গেও ছবি তুলতে পিছপা হচ্ছেন না অনেকে।
ছবিতে হাস্যোজ্জ্বল ব্রিটিশ মানুষটির নাম বেন ইননেস (২৬)। তাঁর এই আনন্দের কারণে তিনি বিমান ছিনতাইকারীর সঙ্গে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন। পাশের ছোটখাটো এই মানুষটিই শরীরে বিস্ফোরকভর্তি বেল্ট বেঁধে ইজিপট এয়ারের একটি আস্ত বিমান ছিনতাই করেছেন।
বিমানটি আলেকজান্দ্রিয়া থেকে কায়রোর উদ্দেশে যাত্রা করলেও সেইফ এলডিন মুসতাফা নামের এই ব্যক্তি সেটিকে সাইপ্রাসে নিয়ে অবতরণ করতে বাধ্য করেন। বিমানটি যখন লারনাকা বিমানবন্দরে অবতরণ করে তখন মুসতাফার সাথে ছবি তোলেন ইননেস। সেই সময়ও মুসতাফার শরীরে সেই বেল্টটি বাঁধা ছিল যেটি বিস্ফোরক ভর্তি বলে তিনি দাবি করছিলেন।
অবশ্য পরে বোমাটি নকল বলে প্রমাণিত হয়।
অ্যাবারডিনের বাসিন্দা ইননেস একজন স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিষয়ক কর্মী। ব্যবসায়িক কাজ শেষে ছিনতাই হওয়া বিমানটিতে করে বাড়ি ফিরছিলেন তিনি।
এই ছবির বিষয়ে ব্রিটিশ গণমাধ্যম সানকে ইননেস বলেন, ‘এই ছবিটা আমি কেন তুলেছি তা আমি নিজেও জানি না। আমি শুধু চরম বিপদের সময় হাসিখুশি থাকতে চেয়েছিলাম। আমি ভাবছিলাম যে, যদি তার শরীরের বোমাগুলো আসল হয় তাহলে আমার আর কিছুই হারানোর নেই। সেজন্য তার কাছে গিয়েই একটি ছবি তুলি।’
কীভাবে সেলফি তোলার জন্য মুসতাফাকে রাজি করালেন তা জানতে চাইলে ইননেস বলেন, একজন কেবিন ক্রুর সহায়তা নিয়ে মুসতাফার সঙ্গে কথা বলেন তিনি। তিনি রাজি হলে হাসিমুখে ছবি তোলেন ইননেস। তিনি বলেন, ‘প্রায় দেড় ঘণ্টা অপেক্ষা করার পর ছবি তোলার কথা বলি। কারণ আমি ভেবেছিলাম, যদি সে বিস্ফোরণটা ঘটায়ই তাহলে তো আর হারানোর কিছু নেই।’
গতকাল মঙ্গলবার মিসরের আলেকজান্দ্রিয়া থেকে কায়রো যাওয়ার সময় ইজিপ্টএয়ারের এমএস১৮১ বিমানটি সাইপ্রাসে অবতরণ করতে বাধ্য করেন মুস্তাফা। ৫৫ যাত্রী ও সাতজন কর্মী থাকা বিমানটিকে সাইপ্রাসের লারনাকা বিমানবন্দরে অবতরণ করানো হয়। পরে অবশ্য সব যাত্রীকে মুক্তি দেওয়া হয়।