শপথ নিলেন মিয়ানমারের প্রথম বেসামরিক প্রেসিডেন্ট
মিয়ানমারের প্রথম বেসামরিক প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়েছেন নবনির্বাচিত থিন কিউ। গত ৫০ বছরের ইতিহাসে দেশটির সর্বোচ্চ পদে এই প্রথম কোনো বেসামরিক ব্যক্তি এলেন। আজ বুধবার মিয়ানমারের রাজধানী নাইপিদো শপথের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে থিন কিউয়ের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হলো।
সাবেক সেনা কর্মকর্তা ও প্রেসিডেন্ট থেইন সেনের স্থলাভাষিক্ত হলেন থিন কিউ। বিবিসি জানিয়েছে, মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সু চির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির (এনডিএল) নেতা থিন কিউ আগামী পাঁচ বছরের জন্য প্রেসিডেন্টের শপথ নিয়েছেন। এই সময়ে তিনি দেশে অনেক পরিবর্তন আনার অঙ্গীকার করেছেন।
রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নেওয়ার পর সংক্ষিপ্ত ভাষণে থিন কিউ বলেন, তাঁর সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ আছে, যাঁর একটি হলো দেশব্যাপী অস্ত্রবিরতি। বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর সঙ্গে সরকারি বাহিনীর সংঘাত চলছে।
রাজধানী নাইপিদোতে অনুষ্ঠিত শপথ অনুষ্ঠানে আরো যোগ দেন, হেনরি ভ্যান থিয়ো এবং মিয়িন্ট সি। এঁরা দুজন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে থিন কিউয়ের কাছে পরাজিত হলেও মন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন।
জানা গেছে, গত নভেম্বরে মিয়ানমারের সাধারণ নির্বাচনের বড় জয় পায় এনডিএল। এরপরও দলটির নেত্রী অং সান সু চিকে প্রেসিডেন্ট পদ গ্রহণে বাধা দেওয়া হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে তিনি প্রসিডেন্ট পদের জন্য থিন কিউকে বেছে নেন। পরে চলতি মাসের শুরুতে অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তিনি জয় পান।
মিয়ানমারের নতুন মন্ত্রিসভার অধিকাংশ সদস্যই নির্বাচিত এনএলডির। দলটির নেত্রী সু চি পররাষ্ট্র, প্রেসিডেন্টের কার্যালয়, শিক্ষা এবং জ্বালানি ও বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নিয়েছেন। তবে সামরিক বাহিনী মনোনীত প্রতিনিধিরা এখনো দেশটির গুরুত্বপূর্ণ কিছু মন্ত্রণালয় দখল করে রেখেছে, যার মধ্যে আছে, প্রতিরক্ষা, স্বরাষ্ট্র ও সীমান্তবিষয়ক মন্ত্রণালয়।
কে এই থিন কিউ
৬৯ বছর বয়সী থিন কিউ মিয়ানমারের মানুষের কাছে ‘বিশ্বাসযোগ্য’ হিসেবে পরিচিত। তিনি সু চির অন্যতম বিশ্বস্ত ও ঘনিষ্ট উপদেষ্টা। তাঁর স্ত্রী সু সু লিনও এনএলডির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতার মেয়ে এবং তিনিও দলটির একজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। যুক্তরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন থিন কিউ। সৎ, বিশ্বস্ত হিসেবে পরিচিত থিন সব সময়ই পর্দার অন্তরালে থেকেছেন। তাঁর বাবা মিন থু উন ছিলেন মিয়ারমারের বিখ্যাত কবি ও লেখক। মিন থুও এনএল ডির সদস্য ছিলেন এবং ১৯৯০ সালের নির্বাচনে জয়ী হন।