সবার কাছে বিদায় নিলেন ফিদেল কাস্ত্রো!
কিউবার বিপ্লবী নেতা ফিদেল কাস্ত্রো বিদায় নিয়েছেন। শিগগিরই মারা যাবেন এমন ইঙ্গিত দিয়ে কিউবার জনগণ ও তাঁর অনুসারীদের কাছ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় নিয়েছেন তিনি।
কিউবার কমিউনিস্ট পার্টির সপ্তম কংগ্রেসে দেওয়া ভাষণে ৮৯ বছর বয়সী এই নেতা বলেন, তিনি হয়তো শিগগিরই মারা যাবেন। কিন্তু বিপ্লব নিয়ে তাঁর পরিকল্পনাগুলো বেঁচে থাকবে।
নতুন প্রজন্মকে দায়িত্ব নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে ফিদেল কাস্ত্রো বলেন, ‘কিছুদিনের মধ্যেই আমার বয়স ৯০ বছর হয়ে যাবে। তখন আমিও অন্যদের মতো হয়ে (মারা) যাব।’
বর্ষীয়ান এই বিপ্লবী বলেন, ‘শেষ সময়টা আমাদের সবার জীবনেই আসবে। কিন্তু কিউবার কমিউনিস্ট দলের ধারণা, এই পৃথিবীতে আজীবন রয়ে যাবে। বিশ্ববাসী জানবে, যদি তাঁরা সততার সঙ্গে কাজ করে, তাহলে তাঁরা মানবসভ্যতার জন্য ভালো জিনিস ও সংস্কৃতি তৈরি করতে পারবে। আর এসবের জন্য আমাদের ক্রমাগত যুদ্ধ চালিয়ে যেতে হবে।’
সাধারণত প্রতি পাঁচ বছর পরপর কিউবায় কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হয়। এখানে উপস্থিত থাকেন দলের বড় বড় সব নেতা। এবারের কংগ্রেস থেকে কিউবার কমিউনিস্ট পার্টির প্রধান নির্বাচিত হয়েছেন ফিদেল কাস্ত্রোর ছোট ভাই ও দেশটির বর্তমান প্রধান রাউল কাস্ত্রো (৮৪)। ২০১৮ সালে অবসরে যাওয়া পর্যন্ত তিনি এ দায়িত্ব পালন করবেন। এ ছাড়া উপপ্রধান হিসেবে পুনর্নির্বাচিত হয়েছেন ৮৫ বছর বয়সী জোস র্যামন মাকাদো।
এর আগে গত সপ্তাহে কংগ্রেসের উদ্বোধন করে ফিদেল কাস্ত্রো জানিয়েছিলেন, এর পর থেকে ৭০ বছর বয়সেই অবসরে যাবেন দলের নেতারা। আগামী ২০২১ সালে পরবর্তী কংগ্রেসের ঘোষণাও দেন তিনি। সেই কংগ্রেসকে নতুন প্রজন্মের নেতারা নেতৃত্ব দেবেন আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, এবারের কংগ্রেসই হচ্ছে ঐতিহাসিক প্রজন্মের শেষ কংগ্রেস। এ সময় পুরো হাভানা হলরুমজুড়ে তালি আর হর্ষধ্বনি দিয়ে এ কথার সমর্থন জানান দলের নেতারা।
এ ছাড়া আগামী পাঁচ বছরে কিউবার অর্থনীতিতে সুদূরপ্রসারী পরিবর্তন আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন ফিদেল কাস্ত্রো।
গত মাসে কিউবা সফর করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। দীর্ঘ ৮৮ বছর পর কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্ট দেশটি সফর করলেন। তবে সফরে ফিদেল কাস্ত্রোর সঙ্গে দেখা হয়নি তাঁর।
ওবামা চলে যাওয়ার পর এক বিবৃতিতে ফিদেল কাস্ত্রো বলেন, কিউবার মার্কিন সাহায্যের প্রয়োজন নেই। এখানে কমিউনিস্ট আদর্শের সঙ্গে দেশ চলবে।