নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ বাংলাদেশ : অ্যামনেস্টি
বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মানুষকে যথাযথ নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক পরিচালক চম্পা প্যাটেল।
গতকাল সোমবার সংস্থাটির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে পণ্য সরবরাহ করার ছদ্মবেশে জোর করে বাসায় ঢুকে বাংলাদেশের প্রথম সমকামীদের অধিকারবিষয়ক ম্যাগাজিন 'রূপবান’-এর সম্পাদক জুলহাজ মান্নান (৩৫) এবং তাঁর বন্ধু তনয় মজুমদারকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষককে কুপিয়ে হত্যার একদিন পরই এই ঘটনা ঘটল। এসব ঘটনা প্রমাণ করে যে, বাংলাদেশে নিরাপত্তার কতটুকু অভাব রয়েছে।
বিবৃতিতে চম্পা প্যাটেল বলেন, ‘এই মাসেই চারটি নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। সবচেয়ে ভয়াবহ বিষয় হলো, এসব ঘটনায় এখন পর্যন্ত কেউ গ্রেপ্তার হয়নি এবং অব্যাহত হুমকির পরও সুশীল সমাজের সদস্যদের জন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়নি। বাংলাদেশের মানুষের বেঁচে থাকার অধিকারকে নিশ্চিত করা দেশটি সরকারের দায়িত্ব। যারা সহিংস কর্মকাণ্ডের বিরোধিতা করেন এবং স্বাধীনভাবে মত প্রকাশ করেন তাঁদের সুরক্ষা দেওয়া সরকারের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। এসব নৃশংস হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের অবশ্যই শনাক্ত করে বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করাতে হবে। সরকার অতীতে অনেকক্ষেত্রে এটা করতে ব্যর্থ হলেও এখন এটা করা জরুরি।’
দেশ থেকে নির্বাসিত সমকামীদের অধিকার নিয়ে কাজ করা কর্মীরা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালকে জানিয়েছেন যে, কখনো তাদের হুমকি দেওয়া হলে তারা যখন পুলিশের সাহায্য চাইতে যেতেন তখন পুলিশের পক্ষ থেকে উল্টো তাদেরই গ্রেপ্তারের কথা বলা হতো।
এ বিষয়ে চম্পা প্যাটেল বলেন, ‘যেখানে বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষ এই ধরনের সহিংস অপরাধী গোষ্ঠীকে গ্রেপ্তার করতে ব্যর্থ হয়েছে, সেখানে অপরাধীরা দিনে দিনে তাদের ক্ষেত্র বিস্তৃত করেছে। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক থেকে সমকামী অধিকারকর্মী কেউ নিস্তার পাননি।’
বাংলাদেশের পুলিশ বাহিনীকে অবশ্যই দেশটিতে বসবাসকারী সমকামী ব্যক্তি ও তাদের অধিকার নিয়ে কাজ করা ব্যক্তিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে বলে মন্তব্য করেন চম্পা।