ইউরোপ ও এশিয়ায় বিস্তৃত হয়েছে ‘যৌন পর্যটন’ : গবেষণা প্রতিবেদন
বিমান ভ্রমণের খরচ কমে যাওয়া এবং ইন্টারনেটের ব্যাপক ব্যবহারের কারণে ‘যৌন পর্যটনে’র বিস্তৃতি ঘটেছে। বর্তমানে ইউরোপ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার কিছু দেশেও এমনটি দেখা যায়। আগে এমন কর্মকাণ্ডের সঙ্গে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই পশ্চিমা দেশের নাগরিকরা যুক্ত ছিলেন। এখন জাপান, চীন ও দক্ষিণ কোরিয়ার পর্যটকরাও এতে জড়িত। সম্প্রতি এক গবেষণা প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।
যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম ‘টেলিগ্রাফ’ এক প্রতিবেদনে জানায়, পর্যটকদের হাতে নারী ও শিশু যৌন নির্যাতনকেই বলা হয় যৌন পর্যটন। ‘গ্লোবাল স্টাডি অন সেক্সুয়াল এক্সপ্লোইটেশন অব চিলড্রেন ইন ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুরিজম’ নামক জাতিসংঘের সহায়তায় করা এক গবেষণায় বিশ্বব্যাপী পর্যটকদের হাতে নারী ও শিশু যৌন নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। এই গবেষণায় শিশু নিরাপত্তাবিষয়ক ৭০টি সংস্থার তথ্য নেওয়া হয়।
গবেষণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত দুই দশকে পর্যটকদের হাতে নারী ও শিশু নির্যাতনের হার বেড়েছে। যৌন পর্যটনের নতুন ক্ষেত্র ইউরোপের দেশ পর্তুগাল, মলডোভা ও ইউক্রেন এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মিয়ানমার, লাওস, ভিয়েতনাম ও কম্বোডিয়া।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ধনী, মধ্যবয়সী পশ্চিমাদের মধ্যেই যৌন পর্যটন সীমাবদ্ধ নেই। অনেক ক্ষেত্রে পর্যটক নন, সাধারণ ভ্রমণকারীরাও এমন কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছেন। তাই গত ২০ বছরে শিশু যৌন নির্যাতনের ঝুঁকি নাটকীয় হারে বেড়েছে।
টেলিগ্রাফ জানায়, প্রতিবেদনের ঝুঁকির বিষয়টি সঠিকভাবে পরিমাপ করা না গেলেও তা বেশ আশঙ্কাজনক এবং বিস্তৃত এটি বলার অপেক্ষা রাখে না।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ইন্টারনেট ব্যবহার করে অনেক পর্যটক আগে থেকেই নির্দিষ্ট দেশের চক্রের সঙ্গে যোগাযোগ এবং তথ্য বিনিময় করে। অনেক ক্ষেত্রে তারা আগে থেকেই নির্দিষ্ট নারী ও শিশুর ব্যাপারে খোঁজখবর নেয়।
গবেষণা অনুযায়ী, ২০ বছর আগেও নারী ও শিশু যৌন নির্যাতনে অভিযুক্ত পর্যটকদের অধিকাংশই ছিল মধ্যবয়সী পশ্চিমা শ্বেতাঙ্গ। উন্নয়নশীল দেশে গিয়ে তাঁরা এমন কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়তেন। কিন্তু বর্তমানে নিজ দেশ বা অঞ্চলের ভ্রমণকারীদের অনেকে নারী ও শিশু যৌন নির্যাতনে অভিযুক্ত। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় দেশগুলোতে নারী ও শিশু যৌন নির্যাতনে অভিযুক্ত পর্যটকদের অনেকেই জাপান, চীন ও দক্ষিণ কোরিয়ার। এসব অঞ্চলে এই নাগরিকদের অহরহ যাতায়াত।
গবেষণা প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে টেলিগ্রাফ জানিয়েছে, ১৯৯৫ সালে বিশ্বব্যাপী পর্যটকের সংখ্যা ছিল ৫২ কোটি ৭০ লাখ। ২০১৪ সালে এই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১১৪ কোটি। পর্যটকের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে যৌন পর্যটনও বাড়ছে।