মিসরের হারানো বিমানটির খোঁজ মিলল গ্রিসের দ্বীপে
মিসরের হারানো বিমানটির খোঁজ মিলল গ্রিসের দ্বীপপুঞ্জে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানায়, গ্রিসের দক্ষিণাঞ্চলীয় দ্বীপপুঞ্জের আশপাশে কমলা রঙের দুটি বস্তু ভাসতে দেখা গেছে।
ভাসমান এই বস্তুগুলোর দেখা মেলেছে দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্ব দ্বীপপুঞ্জ ক্রিট থেকে ২৩০ মাইল দূরে। ধারণা করা হচ্ছে ওই বস্তুগুলো রাডারের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়া ‘ইজিপ্ট এয়ারের’ যাত্রীবাহী বিমানটির কোনো অংশ।
এর আগে স্থানীয় সময় বুধবার রাত ১১টা ০৯ মিনিটে রাডারের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয় প্যারিস থেকে কায়রো অভিমুখী ইজিপ্ট এয়ারের এমএস৮০৪ ফ্লাইটটির। ৬৯ জন যাত্রী নিয়ে বিমানটি হঠাৎ করেই নিয়ন্ত্রণকক্ষের রাডার থেকে অদৃশ্য হয়ে যায় বলে খবর প্রকাশ করে মিসরের সংবাদমাধ্যমগুলো।
এ ছাড়া বিমান সংস্থাটির টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে জানানো হয়েছে, প্যারিস থেকে কায়রোর উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়া এমএস-৮০৪ ফ্লাইটটি রাডার থেকে ‘অদৃশ্য’ হয়ে গেছে। এ বিষয়ে যেকোনো তথ্য পাওয়ামাত্র তা ইজিপ্ট এয়ারের মিডিয়া সেন্টারের মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হবে।
ইজিপ্ট এয়ার বলছে, মিসরের আকাশসীমায় পৌঁছানোর আগেই উধাও হয়ে যায় বিমানটি। প্যারিসের শাল দি গুল বিমানবন্দর ছেড়ে যাওয়ার পর মিসরের আকাশসীমার ৮০ মাইল আগে এবং সমুদ্রসীমা থেকে ২৮০ কিলোমিটার দূরে থাকা অবস্থায় বাংলাদেশ সময় সকাল পৌনে ৭টার দিকে বিমানটি হঠাৎ রাডার থেকে অদৃশ্য হয়ে যায়। এর পর থেকে এখনো বিমানটির কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।
ইজিপ্ট এয়ারের টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে জানানো হয়, বিমানটিতে বিভিন্ন দেশের ৫৬ যাত্রী ও ১০ জন ক্রু ছিলেন। যাত্রীদের মধ্যে ফ্রান্সের ১৫ জন, মিসরের ৩০, ব্রিটেনের এক, বেলজিয়ামের এক, ইরাকের দুই, কুয়েতের এক, সৌদি আরবের এক, সুদানের এক, শাদের এক, পর্তুগালের এক, আলজেরিয়ার এক ও কানাডার একজন নাগরিক রয়েছেন। অবশ্য শুরুতে বিমানটিতে মোট ৬৯ আরোহী ছিল বলে জানানো হয়েছিল।
এদিকে মিসর সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যেহেতু ভূমধ্যসাগর এলাকায় বিমানটি নিখোঁজ হয়েছে, সেহেতু এরই মধ্যে এ অঞ্চলে বিমানটি খুঁজতে অভিযান শুরু হয়েছে। মিসরের সামরিক বাহিনীর সঙ্গে গ্রিস কর্তৃপক্ষও উদ্ধার অভিযানে অংশ নিয়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
নিখোঁজ হওয়ার ১০ মিনিট আগে নিয়ন্ত্রণ কক্ষের সঙ্গে বিমানটির সর্বশেষ যোগাযোগ হয় বলে বিমানবন্দরের এক কর্মকর্তা মিসরের আল আহরাম পত্রিকাকে জানিয়েছেন। সে সময়ও কোনো সমস্যার বার্তা বিমানটি থেকে দেওয়া হয়নি বলে ওই কর্মকর্তা জানান।
এ ছাড়া বিমানযাত্রীদের পরিবারের সদস্যদের কায়রো বিমানবন্দরের কাছে নিয়ে আসা হয়েছে। তাঁদের জন্য প্রয়োজনীয় চিকিৎসক, অনুবাদক এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় সুবিধার ব্যবস্থা করছে ইজিপ্ট এয়ার কর্তৃপক্ষ। যাত্রীদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলতে সেখানে যান মিসরের প্রধানমন্ত্রী শেরিফ ইসমাঈল।
এর আগে গত মার্চ মাসে ইজিপ্ট এয়ারের একটি বিমান ছিনতাই করে সাইপ্রাসে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে অবশ্য আত্মসমর্পণ করে অবরুদ্ধ যাত্রীদের মুক্ত করে দেয় ছিনতাইকারী।